চট্টগ্রাম নগরে পতাকাকাণ্ডে হিন্দু নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছে সনাতনী জাগরণ মঞ্চ। সমাবেশ থেকে আগামী সোমবারের (৪ নভেম্বর) মধ্যে প্রত্যাহার না হলে দেশব্যাপী কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন নেতারা।
বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) নগরের চেরাগী পাহাড় মোড়ে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে এ হুঁশিয়ারি দেন নেতারা।
এছাড়া শুক্রবার বিকেলে ৬৪ জেলায় সমাবেশ এবং রোববার জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
সমাবেশে সনাতনী সমাজ বাংলাদেশের সমন্বয়ক স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, ‘অনেকে বলছে হিন্দুরা প্রতিবেশি দেশ ইন্ডিয়া-আমেরিকার দালালি করছে। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। ক্ষমতায় আসার জন্য ইতোমধ্যে অনেক রাজনৈতিক দল ইন্ডিয়া, আমেরিকা ঘুরে এসেছে সমর্থনের জন্য।’
‘রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা রাষ্ট্রপ্রধান দেবেন’ মন্তব্য করে মামলার বাদী কে এই ফিরোজ খান—এমন প্রশ্ন তুলে ইসকন নেতা গৌরাঙ্গ দাস বলেন, ‘কিছুদিন আগে এই বাংলাদেশের একটা গোষ্ঠী জাতীয় পতাকা অবমাননা করেছিল। আমরা দেখেছি তারা আমাদের জাতীয় পতাকার উপরে ফিলিস্তিনের পতাকা দিয়েছে। আমরা আরো দেখেছি পায়ের নিচে জাতীয় পতাকাকে পড়ে থাকতে। তখন মামলা কেন হলো না? রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা রাষ্ট্রপ্রধান দেবেন। কিন্তু মামলার বাদী এই ফিরোজ খান কে। কোন জায়গা থেকে এসেছে?-এসব জানতে চাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের পতাকা সূর্যাস্তের পর নামিয়ে ফেলার নিয়ম আছে। কিন্তু এই নিয়ম মানা হচ্ছে কোথায়? এছাড়া সেইদিন সমাবেশে পুন্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী কী বলেছেন, তা সারা বাংলাদেশ জানে। তিনি মহাসমাবেশ চলাকালীন সভাস্থলেই ছিলেন। তাহলে কেন এই গেরুয়া পতাকাকে কেন্দ্র করে মামলা দেওয়া হলো!’
মামলা প্রত্যাহারে গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারী আগামী সোমবার পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে বলেন, ‘আগামী সোমবারের মধ্যে মামলা তুলে নেওয়া না হলে এবং এই মামলা নিয়ে জলঘোলা কেউ করতে চাইলে, আমরা ওইদিন বৃহৎ কঠোর অবস্থানে যেতে বাধ্য হবো।’
প্রসঙ্গত, নগরের নিউমার্কেট মোড়ে স্বাধীনতা স্তম্ভে গেরুয়া পতাকা লাগিয়ে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে গত বুধবার সন্ধ্যায় দুই যুবককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই ঘটনায় সনাতন ধর্মবিশ্বাসী সংগঠন আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী এবং চট্টগ্রামের সনাতনী জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক অজয় দত্তসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দেয় সনাতনী জাগরণ মঞ্চ। বিকেল ৩টা থেকে সমাবেশস্থলে জড়ো হয়ে ‘জেগেছেরে জেগেছে সনাতনীরা জেগেছে’সহ নানা স্লোগান দেন তারা। সমাবেশ ঘিরে সতর্ক অবস্থানে ছিল পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
জেএন/এমআর