একাদশ সংসদ নির্বাচনে বেশিরভাগ জায়গায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। তবে প্রতিবারের মতো এবারও নির্বাচনের আগেরদিন অর্থাৎ শনিবার (২৯ ডিসেম্বর) থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বেশ কিছু সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রাণ হারিয়েছে ১১ জন। নির্বাচনি সহিংসতায় সর্বাধিক ৩ জন মারা গেছে চট্টগ্রাম জেলায়। এছাড়া কুমিল্লায় ২জন এবং রাঙামটি, কক্সবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী,বগুড়া, রাজশাহীতে একজন করে নিহত হয়েছেন।
চট্টগ্রাম:
পটিয়া উপজেলার রোববার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টার দিকে জিরি এলাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আবু সাদেক নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। তিনি ইসলামী ছাত্রসেনার সদস্য ছিলেন।
এর আগে শনিবার পটিয়ায় দ্বীন মোহাম্মদ (৩৫) নামে এক যুবলীগ কর্মীকে কুপিয়ে খুন করা হয়।
এছাড়া বাঁশখালী উপজেলার কাঁঠালিয়া ইউনিয়নের বরইতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে শনিবার রাতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গুলি ছোঁড়ে। এ সময় আহমেদ কবির গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। নিহত কবির জাতীয় পার্টির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন বলে জানা গেছে।
কুমিল্লা:
চান্দিনা ও নাঙ্গলকোটে সহিংসতায় দু’জন নিহত হয়েছে। চান্দিনায় পুলিশের গুলিতে মজিবুর রহমান (৩৮) নামের এক ব্যক্তি নিহত হন। আর নাঙ্গলকোটে ভোট দিতে যাওয়ার সময় দুর্বৃত্তের হকিস্টিকের আঘাতে বাচ্চু মিয়া (৫৫) নামে এক বিএনপি নেতার মৃত্যু হয়।
রাঙামাটি:
কাউখালী উপজেলার ঘাগড়ায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের সংঘর্ষে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বাসের উদ্দিন (৩৬) নিহত হয়েছেন। সকাল ৭টার দিকে ঘাগড়া ইউনিয়নের কাঁশখালী এলাকায় এই সংঘর্ষ হয়। হামলায় গুরুতর আহত বাসের উদ্দিনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। এ হামলার ঘটনায় ১৫ জন আহত হয়।
কক্সবাজার:
চকরিয়ার পেকুয়া উপজেলায় দুপুর ১২টার দিকে রাজাখালী মাতুব্বরপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরের মাঠে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ সমর্থক আবদুল্লাহ নিহত হয়। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের ৮ জন আহত হয়। পরে পুলিশ-বিজিবি এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া:
সদর উপজেলার রাজঘর গ্রামে সকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে ইসরাইল মিয়া (২০) নামের একজন মারা যান। উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের রাজঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ-বিএনপির কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষ থামাতে পুলিশ গুলি ছোঁড়ে। এ সময় গুলিবিদ্ধ ইসরাইল হাসপাতালে মারা যান।
নরসিংদী:
জেলার শিবপুরের কুন্দারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের এজেন্ট মিলন মিয়া (৫৫) নিহত হন।
বগুড়া:
বগুড়ার কাহালুতে একটি ভোটকেন্দ্রের সামনে সংঘর্ষে আজিজুল নামের এক যুবলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। বেলা ১১টার দিকে কাহালুর বাগুইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের সামনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় তিনি নিহত হন।
রাজশাহী
রাজশাহীর মোহনপুরের পাকুড়িয়া হাইস্কুল কেন্দ্রের সামনে মেরাজউদ্দিন (২২) নামের আওয়ামী লীগের এক কর্মীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ভোট চলাকালে এখানে তিনটি আসনে সহিংসতায় একই পরিবারের ৬ জনসহ ৯ জন আহত হয়।
জয়নিউজ/পলাশ/আরসি