প্রজনন মৌসুমে মা’ ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। গত ১২ অক্টোবর মধ্য রাত থেকে ৩ নভেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত ২২ দিনের এ নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়।
আজ মধ্যরাত থেকেই শেষ হচ্ছে সাগর ও নদীতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা। সেই সঙ্গে হচ্ছে জেলেদের ২২ দিনের অপেক্ষার অবসান।
ইলিশ আহরণে নদীতে নামছে জেলেরা। এরই মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করএছ তারা। এ নিয়ে আনন্দ উৎসবেরও কমতি নেই জেলে পাড়ায়।
ইলিশ ধরতে সাগর যাত্রায় প্রস্তুতি নিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন চট্টগ্রামের উপকূলীয় মৎস্যজীবীরা।
জাটকা সংরক্ষণ ও মা ইলিশ রক্ষায় ১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর পর্যন্ত সাগর ও নদীতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। এ সময় মাছ আহরণ, পরিবহন ও বিপণন নিষিদ্ধ ছিল।
এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে মৎস্য বিভাগসহ প্রশাসনের সব স্তরের কর্মকর্তারা তৎপর ছিলেন। এবার নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগর ও নদীতে নৌকা ও ট্রলারযোগে মাছ ধরা শুরু করতে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন জেলেরা।
মৎস্যজীবীরা জানিয়েছেন, গেল মৌসুমে আশানুরূপ রুপালি ইলিশ শিকার হয়নি। ঋণের টাকা পরিশোধ হয়নি। একই সঙ্গে ইলিশ ধরার ব্যয়ও উঠে আসেনি।
গেল মৌসুমে অমাবস্যার জো ও পূর্ণিমার জো কোনোটাতেই পর্যাপ্ত ইলিশ মেলেনি। জেলেদের আশা এবার সাগরে জাল ফেললেই ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়বে।
এদিকে, সাগর যাত্রার প্রস্তুতি হিসেবে জাল, জ্বালানি তেল, বরফ, চাল, ডালসহ খাবার পানি গুছিয়ে প্রস্তুতি নিচ্ছেন চট্টগ্রাম উপকূলের লক্ষাধিক জেলে।
একই সঙ্গে ট্রলারের যাবতীয় মেরামত, তৈরি করা নতুন জাল, নৌকায় তোলা, পুরনো জাল, সেলাইসহ সমুদ্রে মাছ ধরার সব প্রস্তুতি এরই মধ্যে শেষ হয়েছে। চট্টগ্রামের ফিশারিঘাট, ব্রিজঘাট, অভয়মিত্র ঘাট, আনোয়ারা, বাঁশখালী, সীতাকু-, মীরসরাই এবং কাট্টলীসহ প্রত্যেক উপকূলীয় অঞ্চলে নৌযান নিয়ে সাগরে নামার অপেক্ষায় রয়েছেন জেলেরা।
গত মৌসুমে একের পর এক বৈরী আবহাওয়ায় মাছ শিকারে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়েছিল। একই সঙ্গে নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি ও জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন সমস্যায় বেহাল অবস্থায় ছিল জেলেদের।
ফলে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় অর্থ কষ্ট ও অনাহারে দিন কাটিয়েছেন মৎস্যজীবীরা। তাই এবার এক বুক আশা নিয়ে লাখ লাখ জেলে সাগরে মাছ ধরা শুরু করবে।
মৎস্য আড়তগুলোতে আবার প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসবে এমনটাই মনে করছেন আড়তদাররা। এখন সময় এসেছে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার।
প্রতি বছর আশ্বিন মাসের পূর্ণিমার শেষের দিকে গভীর সমুদ্র থেকে নদীর মোহনায় এসে ডিম ছাড়ে মা ইলিশ। তাই ২০০৬ সাল থেকে মা ইলিশ রক্ষায় আশ্বিন মাসের পূর্ণিমার শেষের দিকে (১৩ অক্টোবর থেকে ৩ নভেম্বর) ২২ দিন অবরোধ দিয়ে আসছে সরকার।
এ সময় সব ধরনের মাছ শিকার, পরিবহন, মজুত, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। সরকার ঘোষিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে রবিবার রাত ১২টায়।
ট্রলার মেরামত, নতুন জাল তৈরি ও পুরনো জাল সেলাইসহ সমুদ্রে মাছ ধরার সব প্রস্তুতি শেষ করে অপেক্ষায় আছেন উপকূলের জেলেরা। সাগরে ৮-১০ দিন অবস্থান করার মতো খাবারও প্রস্তুত করা হচ্ছে।
জেএন/পিআর