চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র হিসেবে শপথ নিয়েছেন মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেন। শপথ পড়িয়েছেন এলজিআরডি উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।
রোববার (৩ নভেম্বর) সকালে সচিবালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে তাকে শপথবাক্য পাঠ করান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ।
অনুষ্ঠানে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছাড়াও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ডা. শাহাদাত হোসেনের শপথ গ্রহণ উপলক্ষে চট্টগ্রাম থেকেও অনেক নেতাকর্মী ঢাকায় আসেন।
শপথগ্রহণ শেষে চসিক মেয়র বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা জানাতে যাবেন। ৫ নভেম্বর চট্টগ্রাম ফিরে দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন চসিকের নতুন মেয়র।
২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী রেজাউল করিম ৩ লাখ ৬৯ হাজার ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।
২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি একটি মামলা করেন শাহাদাত। তার অভিযোগ, ২০২১ সালের ২৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চসিক নির্বাচনের ফলাফলে ইসি কর্মকর্তারা কারচুপি করেছিলেন।
মামলার এজাহারে শাহাদাত আরও অভিযোগ করেন, তিনটি ভোটকেন্দ্রে তার শূন্য ভোট দেখানো হলেও তিনদিন পর ২৮টি কেন্দ্রে তার শূন্য ভোট দেখানো হয়—যা অবিশ্বাস্য ও অকল্পনীয়।
মামলায় ইভিএমের মাধ্যমে নির্বাচনের ফল কারচুপির অভিযোগে তৎকালীন সিটি করপোরেশনের মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী, নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. হাসানুজ্জামান, প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদাসহ ছয়জনকে আসামি করা হয়।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে গত ১ অক্টোবর চট্টগ্রামের প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক খাইরুল আমিন ডা. শাহাদাতকে মেয়র ঘোষণা করে রায় দেন। এছাড়া আওয়ামী লীগের রেজাউল করিম চৌধুরীর মেয়র নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করেন। পাশাপাশি ১০ দিনের মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারির জন্য নির্বাচন কমিশন সচিবকে নির্দেশ দেন। আদালতের রায়ের ৮ দিন পর ৮ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন সচিব এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ১৯ আগস্ট দেশের ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়রকে অপসারণ করে। তাদের মধ্যে ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীও।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলামকে সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। সরকারের এমন সিদ্ধান্তের কারণে সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে শাহাদাত হোসেন শপথ নিতে পারবেন কি না, তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়।
অবশ্য ১৭ অক্টোবর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ১৯ আগস্ট মেয়রদের অপসারণের প্রজ্ঞাপনের সংশোধন করে একটি সংশোধিত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মাহবুবা আইরিন স্বাক্ষরিত সংশোধিত প্রজ্ঞাপনে ৩ নম্বর ক্রমিক বিলুপ্ত করা হয়েছে। ৩ নম্বরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ছিলেন।
জেএন/এমআর