দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং দলের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) নেতা খোরশেদ আলমকে প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো.তাইফুল ইসলাম টিপু স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপি নেতা খোরশেদ আলমকে সংগঠনের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
জানা গেছে, খোরশেদ আলমের বিরুদ্ধে বিএনপির ভাবমূর্তি ও সুনাম নষ্ট করে দুর্নীতি, চাঁদাবাজী, পদ/বদলি বানিজ্য করে স্বৈরাচার ও আওয়ামিলীগপন্থী সিবিএ নেতাদের পুনর্বাসন করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম এমইএস কলেজের প্রিন্সিপাল সরওয়ারকে ছাত্র-জনতা হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া এবং তাকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক হল আহবায়কের ভূয়া পদবী বিক্রি করে ১০ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজির ফোনালাপ ভাইরাল হয়েছে। এরআগে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় বিভিন্ন টাউট ও দালালের সাথে যোগসাজশে লাখ লাখ টাকা দুর্নীতি ও কমিশন আদায়ে হাতে নাতে ধরা পড়েন খোরশেদ। ওই মামলায় কক্সবাজার জেলা আদালতে দন্ডবিধি ১৮৬০ এর ১৮৬ ধারায় সে সাজাপ্রাপ্ত ও দন্ডিত হন।
জানা গেছে, খোরশেদ আলম বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসলাম চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারীর দায়িত্ব পালনকালে আর্থিক অনিয়ম ও কেলেংকারীতে অভিযুক্ত হওয়ায় ওই পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সদ্য ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামীগ সরকারের আমলে কক্সবাজারে ১২টি মেগা প্রকল্পসহ ৭৪টি প্রকল্পে জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়ায় কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার একটি সিন্ডিকেটের সাথে যোগসাজশে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেন তিনি। এ বিষয়ে দুদকে দুইটি মামলায় অভিযুক্ত হন খোরশেদ।
তার বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ রয়েছে, কক্সবাজারের মহেষখালী উপজেলায় প্রস্তাবিত সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণে দুই বা ততোধিক ব্যক্তির মধ্যে বিরোধপূর্ণ ও মামলা বিদ্যমান জায়গার টাকা উত্তোলন করে দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে বেশ কিছু সংখ্যক জমির মালিক থেকে উচ্চহারে কমিশন হিসেবে অগ্রিম টাকা নিয়ে আর ফেরত না দেওয়া।
রুপালী ব্যাংক এর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের বিভিন্ন নির্বাহী থেকে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের উপর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বিশেষ করে সাবেক যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদ ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ড. শাহাদাত হোসেনের নাম ও রূপালী ব্যাংকের জিয়া পরিষদের প্রভাব দেখিয়ে যান খোরশেদ।
তিনি , স্থানীয় ম্যানেজমেন্টকে জিম্মি করে আওয়ামীগের ব্যাংকের পেশাজীবি সংগঠন “বঙ্গবন্ধু পরিষদের” সাধারণ সম্পাদক, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন দুর্নীতিবাজ অফিসারদের ব্যাংকের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় পদায়ন করছে। অসৎ ও দুর্নীতিবাজ অফিসারকে ব্যাংকের জিএম এর পিএস করার জন্য নানামুখী চাপ দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে যা ব্যাংকের লোকাল ম্যানেজমেন্টের কাজে নিয়মিত বাধা সৃষ্টি করছে। এতে চেয়ন অব কমান্ড ভেংগে পড়ার মত অবস্থা। আর এক্ষেত্রে তার বদলি বানিজ্য ও পদায়ন বানিজ্যে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও ঘুষ বাণিজ্যে করছে রূপালী ব্যাংক শান্তিরহাট শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মোহাম্মদ মাইমুনর রশিদ।
জেএন/এমআর