চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র একই থানার বিটেক কলেজ রোড এলাকার ব্রাহ্মণ পুকুরে ফেলে দেওয়ার তথ্য পেয়ে জেলেদের সহায়তায় পুকুরটিতে জাল ফেলে উদ্ধার অভিযান চালিয়েছে পুলিশ।
তবে কয়েক ঘন্টা চেষ্টার পরও সেখানে কোন অস্ত্র পাওয়া যায়নি। অবশেষে সেই অস্ত্রের সন্ধান মিলেছে পাহাড়ি জঙ্গলে।
আকবরশাহ থানার ফারুক চৌধুরীর মাঠের পশ্চিম পাশের দুই নম্বর লেনের শেষ মাথায় অবস্থিত ইস্পাহানি পাহাড়ের জঙ্গলের ভেতর মাটি খুঁড়ে চাপা দেওয়া অবস্থায় পাওয়া গেছে একটি নাইন এমএম পিস্তল।
সোমবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যার দিকে অস্ত্রটি উদ্ধার করে পুলিশ। এর আগে, একইদিন ভোরে থানা ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগে হওয়া মামলায় মাহাবুর রহমান নামে একজনকে গ্রেফতার করে পাহাড়তলী থানা পুলিশ।
গ্রেফতারের পর জিজ্ঞাসাবাদে লুট করা অস্ত্র একই থানার বিটেক কলেজ রোড এলাকার ব্রাহ্মণ পুকুর নামে একটি পুকুরে ফেলে দেওয়ার তথ্য দেন তিনি।
এরপরই সেই অস্ত্র উদ্ধারে অভিযানে নেমে জেলেদের সহায়তায় পুকুরটিতে জাল ফেলে পুলিশ। তবে এ সময় কোনো অস্ত্র পাওয়া যায়নি। উদ্ধার করা হয় থানা থেকে লুট হওয়া পুলিশের ব্যবহৃত পুড়িয়ে দেওয়া দুটি মোটরসাইকেল।
নগর পুলিশের এডিসি (জনসংযোগ) কাজী মোহাম্মদ তারেক আজিজ জানান, সোমবার ভোরে মাহাবুর রহমানকে গ্রেফতারের পর তার দেওয়া তথ্যে পাহাড়তলী থানার কর্নেল জোন্স রোড়ের একটি বসতঘর থেকে ইউনিফর্মসহ পুলিশের ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসপত্র উদ্ধার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ও পুলিশের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল বিটেক কলেজ রোড এলাকার একটি পুকুরে গোপন করার তথ্য দেন মাহাবুর।
সেই তথ্যে বেলা পৌনে ১২টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টা পুকুরটিতে তল্লাশি চালানো হয়। এতে দুটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হলেও কোনো অস্ত্র পাওয়া যায়নি।
এডিসি জানান, ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনের নাম জানান মাহাবুর। তার দেওয়া তথ্যে একইদিন বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আকবরশাহ থানার রেলওয়ে হাউজিং সোসাইটি এলাকা থেকে নুর নবী নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়।
এরপর দুজনকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানান- আকবরশাহ থানার ফারুক চৌধুরীর মাঠের পশ্চিম পাশের দুই নম্বর লেনের শেষ মাথায় অবস্থিত ইস্পাহানি পাহাড়ের জঙ্গলের ভেতর মাটি খুঁড়ে চাপা দেওয়া হয়েছে একটি পিস্তল।
সেই তথ্যে বিকেল ৫টা থেকে প্রায় দেড়ঘণ্টা সেখানে অভিযান চালিয়ে একটি নাইন এমএম পিস্তল উদ্ধার করা হয়। যেটি পাহাড়তলী থানা থেকে লুট হয়েছিল। গ্রেফতারকৃত দুজনের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর চট্টগ্রাম নগরের বেশ কয়েকটি থানায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
সেদিন থানার নথিপত্র জ্বালিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি অস্ত্র, গুলি, জব্দকৃত মালামাল এবং পুলিশের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল লুট করে দুর্বৃত্তরা। এসব ঘটনায় থানাগুলোতে পৃথক কয়েকটি মামলা হয়।
ঘটনার পর থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ও মালামাল উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর মধ্যে সম্প্রতি বিভিন্ন সময়ে র্যাব ও পুলিশের পৃথক অভিযানে লুট হওয়া অস্ত্র এবং বিভিন্ন মালামাল উদ্ধার করা হয়।
জেএন/পিআর