চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদ বোস্তামী থানা এলাকায় পাঁচ বছর আগে রেবেকা সুলতান মনি নামে এক নারীকে শ্বাসরোধে হত্যার ঘটনায় আজ রায় ঘোষণা করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) চতুর্থ অতিরিক্ত চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ সিরাজাম মুনীরার আদালত এ মামলায় একজনের মৃত্যুদণ্ড ও আরেকজনের যাবজ্জীবন এবং একজনকে খালাস দেন।
এর মধ্যে আসামি নেজাম উদ্দিনকে মৃত্যুদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত।
অপর আসামি আবদুল হালিমকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড, ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সাজা দিয়েছে আদালত।
দণ্ডিত নেজাম উদ্দিন (৩০) চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের হালিমপুর গ্রামের মৃত জালাল আহাম্মদের ছেলে। নেজাম নগরীর ডবলমুরিং থানার উত্তর আগ্রাবাদের মুহুরি পাড়ার বাসিন্দা।
যাবজ্জীন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আবদুল হালিম (৪৫) ভোলার চরফ্যাশনের দক্ষিণ চর আইচার মো ইউনুছের ছেলে। খালাস পাওয়া আবু সিদ্দিক রুবেল (২৯) নগরীর বায়েজিদ বোস্তামি থানার মির্দ্দাপাড়ার মো. আলী আকবরের ছেলে।
আসামিদের মধ্যে নেজাম উদ্দিন রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আবদুল হালিম পলাতক।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী ওমর ফুয়াদ এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যপ্রমাণে বায়েজিদ বোস্তামী থানার রেবেকা সুলতান মনি হত্যা মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আসামি মো. নেজাম উদ্দিনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মো.আবদুল হালিমকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
তাছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আসামি আবু সিদ্দিক রুবেলকে খালাস দিয়েছেন আদালত। রায়ের সময় মো.নেজাম উদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আবদুল হালিম আদালতে হাজির না থাকায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১১ মে বায়েজিদ বোস্তামী থানার মুরাদনগর মির্দ্দাপাড়া জামাল সাহেবের বিল্ডিংয়ের ৪র্থ তলার একটি ফ্ল্যাটে মো.আব্দুল হালিমের নির্দেশে মো. নেজাম উদ্দিন রেবেকা সুলতান মনিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মরদেহ গুম করার উদ্দেশ্যে ওই কক্ষ তালাবদ্ধ করে পালিয়ে যান।
আবু সিদ্দিক রুবেল ঘটনাস্থলে আসামিরা রেবেকা সুলতান মনিকে হত্যা করে মরদেহ গুম করে রাখার বিষয়ে অবগত হলেও কাউকে জানায়নি।
ফ্ল্যাট বন্ধ অবস্থায় দুর্গন্ধ বের হওয়ায় পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ১৩ মে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়ে দেন।
এ ঘটনায় তৎকালীন বায়েজিদ বোস্তামী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল ইসলাম বাদি হয়ে থানায় মামলা করেন।
তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগ পত্র দেন। এতে বলা হয়, আসামি আবদুল হালিমের নির্দেশে আসামি নেজাম উদ্দিন শ্বাসরোধ করে রেবেকা সুলতানাকে হত্যা করে।
২০২২ সালের ১ আগস্ট তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়। এই মামলায় ১১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার আদালত এই রায় দেয়।
জেএন/পিআর