সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে উঠতে শুরু করেছে শীতকালীন শাক-সবজি। দোকানগুলোতে শীতের সবজির পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা।
তবে হাতেগোনা দু-একটি সবজি ছাড়া এখনও বেশিরভাগ সবজি বিক্রি হচ্ছে আগের দামেই। অপরিবর্তিতই রয়েছে মাছের দাম। ঊর্ধ্বমুখী আছে ডিম ও মুরগির দাম।
ভোক্তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে মাছ-মাংসের বাজার বাড়তি দামেই আটকে রয়েছে, যা আরও কমানো সম্ভব।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) চট্টগ্রাম নগরীর বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
বক্সির হাট বাজারের সবজি বিক্রেতা রাইসুল বলেন, বাজারে সরবরাহ কিছুটা বাড়ায় শীতের কয়েকটি সবজির দাম কমছে। সরবরাহ ঠিক থাকলে ধীরে ধীরে সকল শীতকালীন সবজির দাম কমবে।
বাজারে মানভেদে প্রতি কেজি বেগুন ৭০-৮০ টাকা, করলা ৬০-৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়শ ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, লতি ৬০-৭০ টাকা, কহি ৬০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ টাকা ও পটোল ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আর প্রতি কেজি পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, গাজর ১৪০ টাকা, কচুরমুখী ৭০-৮০ টাকা, টমেটো ১৪০ টাকা, শিম ৮০-১০০ টাকা ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়।
এছাড়া, প্রতি কেজি ধনেপাতা ১৪০-১৬০ টাকা ও চিচিঙ্গা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। আর মানভেদে প্রতি পিস ফুলকপি ৪০-৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা এবং লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা।
এদিকে, নিম্নমুখী শাকের বাজারও। লালশাকের আঁটি ১৫ টাকা, পাটশাক ১৫-২০ টাকা, পুঁইশাক ৪০ টাকা, মুলাশাক ১৫ টাকা, ডাঁটাশাক ১৫ টাকা, কলমিশাক ১০-১৫ টাকা ও পালংশাক বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকায়।
দাম কমেছে কাঁচা মরিচেরও; খুচরা পর্যায়ে বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৪০ টাকায়; আর পাইকারিতে বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০০-১১০ টাকা দরে।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে সরবরাহ বেড়েছে কাঁচা মরিচের। এতে পাইকারি ও খুচরা উভয় পর্যায়েই কমেছে দাম।
আজকের বাজারে প্রতি কেজি পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা পর্যন্ত, যা গত সপ্তাহেও বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা পর্যন্ত কেজি। এছাড়াও বাজারে শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আজকের বাজারে প্রতি কেজি তেলাপিয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৩০ টাকা এবং কই মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত।
বাজারে প্রতি কেজি পাবদা ৩৫০ টাকা, রুই ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাঁতল ৩২০ থেকে ৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া চিংড়ি প্রতি কেজি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বোয়াল প্রতি কেজি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, সরপুঁটি প্রতি কেজি ৩০০ টাকা, রুপচাঁদা ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা, গলসা ৬০০ টাকা, ট্যাংরা প্রতি কেজি ৬০০ টাকা, চাপিলা মাছ ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।
মাছ ব্যবসায়ীরা জানালেন, আড়তে দামটা বেশি থাকে, তখন বাধ্য হয়েই বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। কিছুদিন আগে বন্যাসহ বেশ কিছু কারণে দামটা বেশি ছিলো, এখন আবার কিছু কিছু মাছের দাম কমতে শুরু করেছে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কাজির দেউরি বাজারে আসা ক্রেতা লাকি রাহা জানালেন, খাওয়ার মধ্যে কোনোভাবে কিনি ব্রয়লার আবার কোনো কোনো সময় সোনালি মুরগি। কিন্তু দামটা বেড়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বর্তমান বাজারেও যে অবস্থা, তাতে করে ব্রয়লার মুরগিও কেনা এখন দায় হয়ে গেছে।
তিনি মনে করেন, ব্রয়লার মুরগির দাম সর্বোচ্চ ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা পর্যন্ত হলেই যথেষ্ট কিন্তু এই মুরগি আজকে কিনেছি ১৭৫ টাকায়, যা হুটহাট করেই আবার ২০০-২১০ টাকা কেজি হয়ে যায়। সংশ্লিষ্টদের যদি বাজারে মনিটরিং না থাকে তাহলে ব্যবসায়ীরা নয়ছয় করবে এটাই স্বাভাবিক।
আজকের বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করতে দেখা গেছে প্রতি কেজি ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকায়। সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩৩০ টাকা, কক মুরগি ৩২০ থেকে ৩৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
দেশি মুরগি আগের মতো বাড়তি দামে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা আর খাসির মাংস ১১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
বর্তমানে প্রতি ডজন লাল ডিম খুচরা পর্যায়ে ১৪৪-১৪৫ টাকা ও সাদা ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৪ টাকায়। এতে প্রতি পিস ডিমের দাম পড়ছে ১২ টাকা। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম ২৪০ টাকা ও দেশি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৫০ টাকায়।
জেএন/পিআর