অস্ট্রেলিয়াকে ৯ উইকেটে হারিয়ে সিরিজে সমতায় ফিরল পাকিস্তান

খেলাধুলা ডেস্ক

অ্যাডিলেইডে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শুক্রবার স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়াকে ৯ উইকেটে হারিয়েছে পাকিস্থান।

- Advertisement -

স্রেফ ৩৫ ওভারে অজিদের ১৬৩ রানে আটকে বাবর আজম যখন অ্যাডাম জাম্পাকে ছক্কায় উড়িয়ে জয় নিশ্চিত করলেন হাতে তখনও ১৪১ বল।

- Advertisement -google news follower

এর আগে আগুন ঝরা বোলিংয়ে জয়ের প্রেক্ষাপট তৈরি করলেন দুই পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি ও হারিস রউফ।

পরে ব্যাট হাতে শতরানের উদ্বোধনী জুটিতে জয় ত্বরান্বিত করলেন সাইম আয়ুব ও আব্দুল্লাহ শফিক। অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে সিরিজে সমতা টানল পাকিস্তানও।

- Advertisement -islamibank

অস্ট্রেলিয়া ইনিংসের মিডলঅর্ডারে গতি আর সুইংয়ের মিশেলে আগুন ঝরিয়ে ২৯ রানে একাই ৫ উইকেট নিয়েছেন রউফ। টপ অর্ডারের দুটিসহ আফ্রিদি নিয়েছেন ২৬ রানে ৩টি। একটি করে নেন অন্য দুই পেসার নাসিম শাহ ও মোহাম্মদ হাসনাইন।

ওয়ানডেতে রউফ ৫ উইকেটের স্বাদ পেলেন পঞ্চমবার। গত বছর আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১৮ রানে ৫ উইকেট তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং।

অস্ট্রেলিয়ায় পাঁচ উইকেট শিকার করা পাকিস্তানের নবম বোলার রউফ। সবশেষ ২০১৭ সালে পাঁচ শিকার ধরেছিলেন হাসান আলি।

রউফের এমন বিধ্বংসী বোলিংয়ে উইকেটের পেছনে ভরসা হয়ে ছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। ছয়টি ক্যাচ নিয়ে পাকিস্তানের কিপার স্পর্শ করেছেন বিশ্বরেকর্ড।

রউফের এই পাঁচ উইকেটের চারটিতেই ক্যাচ নেন রিজওয়ান। সঙ্গে আরও দুটি ক্যাচ মিলিয়ে তিনি স্পর্শ করেন বিশ্বরেকর্ড।

এক ওয়ানডেতে ছয় ডিসমিসালের সপ্তদশ নজির এটি। তবে পাকিস্তানের হয়ে আগে করতে পেরেছিলেন কেবল সারফারাজ আহমেদ।

অধিনায়ক হিসেবে ছয় ডিসমিসালের কৃতিত্ব ওয়ানডে ইতিহাসে আগে ছিল কেবল একজনেরই। ২০০০ সালে রেকর্ড বইয়ে নাম তুলেছিলেন ইংল্যান্ডের অ্যালেক স্টুয়ার্ট।

অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি অ্যাডাম গিলক্রিস্ট একাই ছয় ডিসমিসাল করেছেন ছয় ম্যাচে। একাধিকবার এটি করতে পেরেছেন আর কেবল দক্ষিণ আফ্রিকার কুইন্টন ডি কক।

রিজওয়ান, সারফারাজ ও স্টুয়ার্ট ছাড়া একবার করে এই অভিজ্ঞতা হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার মার্ক বাউচার, ইংল্যান্ডের জস বাটলার ও ম্যাট প্রায়র, স্কটল্যান্ডের ম্যাথু স্কট, ওয়েস্ট ইন্ডিজের রিডলি জ্যাকব্স ও ভারতের মাহেন্দ্র সিং ধোনির।

রেকর্ডটি শুধু নিজের করে নেওয়ার দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিলেন রিজওয়ান। কিন্তু নাসিম শাহর বলে অ্যাডাম জ্যাম্পার ক্যাচ ছেড়ে দেন তিনি।

রউফ-রিজওয়ানের এমন কীর্তির দিনে ব্যাট হাতে আলো ছড়ান আয়ুব ও শফিক। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে আয়ুব খেলেন ৭১ বলে ৫ চার ও ৬ ছক্কায় ৮২ রানের ইনিংস।

৬৯ বলে ৪টি চবার ও ৩ ছক্কায় ৬৪ রানে অপরাজিত থাকেন আরেক ওপেনার শফিক। উদ্বোধনী জুটিতেই তারা তোলেন ১২৩ বলে ১৩৭ রান।

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পাকিস্তানের যে কোনো উইকেটে এটি দ্বিতীয় সেঞ্চুরি জুটি। এর আগে ১৯৮৪–৮৫ মৌসুমে মহসিন খান–মুদাসসর নজররা এমসিজিতে গড়েছিলেন আগের জুটিটি।

জ্যাম্পার বলে আয়ুব শর্ট থার্ড ম্যানে ক্যাচ দিলেও বাবরের সঙ্গে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন শফিক। জয়ের জন্য যখন দরকার ১ রান তখন জাম্পাকে ছক্কায় উড়িয়ে উদযাপন করেন বাবর আজম (২০ বলে ১৫*)।

অ্যাডিলেইড ওভালের উইকেট ব্যাটিং সহায়ক হবে বলেই ধারাভাষ্যে বারবার উল্লেখ করছিলেন অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, মার্ক ওয়াহ, ডেভিড ওয়ার্নার, ওয়াসিম আকরামরা।

বল সেখানে ব্যাটে এসেছে দারুণভাবে। তবে যথেষ্ট মুভমেন্ট ও বাউন্সও ছিল, যা কাজে লাগান পাকিস্তানি পেসাররা।

টসে হেরে ব্যাটে নেমে ঝড়ের আভাসও দেন জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকার্গ। তৃতীয় ওভারে তাকে এলবিডব্লিউ করে সেই ঝড় থামান আফ্রিদি।

অস্ট্রেলিয়ার উইকেট পতনের সেই শুরু। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে তারা। সর্বোচ্চ ৩৮ রান এসেছে তৃতীয় উইকেট জুটিতে। সেই জুটির নেতৃত্বে থাকা স্টিভেন স্মিথের ভ্যাট থেকে এসেছে সর্বোচ্চ ৩৫ রান। আরও সাত ব্যাটার স্পর্শ করেছেন দুই অঙ্ক কিন্তু ২০ স্পর্শ করতে পারেননি কেউই।

এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা টানল পাকিস্তান। রোববার পার্থের ম্যাচটি তাই পরিণত হয়েছে অঘোষিত ফাইনালে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ৩৫ ওভারে ১৬৩ (স্মিথ ৩৫, শর্ট ১৯, জাম্পা ১৮, ইংলিস ১৮; রউফ ৫/২৯, আফ্রিদি ৩/২৬)।

পাকিস্তান: ২৬.৩ ওভারে ১৬৯/১ (সাইম ৮২, শফিক ৬৪*, বাবর ১৫*; জাম্পা ১/৪৪)।

ফল: পাকিস্তান ৯ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: হারিস রউফ।

জেএন/পিআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM