অগ্রহায়ণ মাস মানেই নতুন ধান, নতুন চাল আর নবান্ন উৎসবের রঙিন আমেজ। তবে এবার বগুড়ার নবান্ন উৎসব শুধু আনন্দ নয়, আতঙ্কেরও বটে।
নবান্ন ঘিরে নতুন ফসলের বাজারে প্রাণচাঞ্চল্য বাড়লেও দাম আকাশচুম্বী। এতে হতাশা ব্যক্ত করেছেন ক্রেতারা।
রোববার (১৭ নভেম্বর) সকালে বগুড়ার রাজাবাজার, ফতহে আলী বাজার ও অন্যান্য বাজার ঘুরে দেখা যায়, নবান্নের চাহিদা পূরণে বাজারে প্রচুর নতুন পণ্য উঠেছে। তবে দাম ঊর্ধ্বমুখী।
এরমধ্যে নিত্যপণ্য আলুর দাম শুনলেই ইঁতকে উঠবেন। বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে ৪২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে নতুন আলু।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) শিবগঞ্জের বিভিন্ন হাটে-বাজারে খোঁজ নিয়ে এ তথ্য জানা গেছে। অথচ, রোববার নতুন আলু ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছিল।
জানা গেছে, সোমবার উত্তরবঙ্গের সবচেয়ে বড় সবজির বাজার বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার মহাস্থান হাটে ৩৮০ টাকা কেজি দরে নতুন আলু পাইকারি বিক্রি হয়েছে।
শিবগঞ্জ থানা বাজার, শিবগঞ্জ হাট, মোকামতলা, গুজিয়া, আমতলী ও কিচকের খুচরা বাজারে তা ৪২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।
বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদার তুলনায় আমদানি কম হওয়ায় আলুর দাম এত বেশি। তবে কিছুদিনের মধ্যে মৌসুম শুরু হলে দাম কমে যাবে।
অন্যদিকে, ক্রেতারা বলছেন, এই প্রথম আলুর দাম ৪২০ টাকা কেজি হওয়া দেখালাম। পুরাতন আলুর দামও বেশি।
মহাস্থান সবজি বাজারে আলু বিক্রি করতে এসেছেন অনন্তবালা গ্রামের আজিজুল। তিনি বলেন, কিছু কৃষক অল্প পরিমাণে আগাম আলু রোপণ করেছিলেন, তারাই বাজারে নতুন আলু এনছেন।
বগুড়ায় এখনও পুরোদমে নতুন আলু তোলা শুরু হয়নি। এ ছাড়া ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর থেকে কিছু নতুন আলু আসছে।
ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম শিবগঞ্জ থানা বাজারে আলু কিনতে এসে অবাক। তিনি বলেন, আলুর কেজি ৪২০ টাকা দেখতে হবে কখনও কল্পনাও করতে পারিনি। পুরাতন আলুর কেজিও ৭০ টাকা।
এভাবে সবজির দাম বাড়লে মানুষ দুমুঠো ভাত খাবে কী দিয়ে। আলু ভর্তা ও ডাল দিয়েও মানুষ আর ভাত খেতে পারবে না।
কৃষি অধিদপ্তর বগুড়ার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম বলেন, ডিসেম্বরের শেষ থেকে জানুয়ারিতে আলুর ভরা মৌসুম শুরু হবে। তখন নতুন আলু বাজারে আসবে।
এখন সামান্য কিছু কৃষক অধিক লাখের আশার আগাম আলু চাষ করেছে। যা বেশি দামে বিক্রিও হচ্ছে। তবে এগুলো পরিপক্ব নয়।
এ বছর বগুড়া জেলায় ২ হাজার ২৫০ হেক্টর জমি থেকে ৪০ হাজার ৫০০ টন আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
তাছাড়া বগুড়ার বিভিন্ন বাজারে পাতা পেঁয়াজ ৯০-১০০ টাকা, শিম ১০০ টাকা, ফুলকপি পিস ৬০-৭০ টাকা, টমেটো কেজি ২৪০ টাকা, পটোল ৪০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা ও কাঁচামরিচ ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
জেএন/পিআর