একটা সময় ছিল, স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে কালক্ষেপণ হতো। আজ-কাল করে কেটে যেত বেশ কিছুদিন। শিক্ষার্থীদের এর চেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হতো সরকারি বই পাওয়া নিয়ে। নতুন বছর এসে মাস পেরিয়ে গেলেও নতুন বইয়ের দেখা পাওয়া যেত না।
ধারাবাহিক এ প্রক্রিয়ার ব্যত্যয় ঘটায় আওয়ামী লীগ সরকার। আরেকটু সহজ করে বললে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনিই সর্বপ্রথম ঘোষণা দিয়ে চালু করে, ১ জানুয়ারি বই বিতরণ। তাঁর শাসনামলে কখনো এ নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেনি।
তবে এবারের প্রেক্ষাপটটা ছিল ভিন্ন। কারণ ডিসেম্বরেই যে অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। তাই ১ জানুয়ারি বই পাওয়া নিয়ে সংশয় ছিল শিক্ষার্থীদের। তবে সব সংশয় দূর করে ঠিকই ১ জানুয়ারি বিতরণ করা হয়েছে বই। নির্বাচনের গণসংযোগ থেকে শুরু করে হাজারো কাজের ভিড়ে প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনায় ছিল বই বিতরণ। মূলত প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতার কারণেই ১ জানুয়ারি নতুন বই পৌঁছে গেছে শিক্ষার্থীদের হাতে।
দিনবদলের হাওয়ায় বছরের প্রথম দিনই শিক্ষার্থীরা মেতেছে বই উৎসবে। ২০১০ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ তত্ত্বাবধানে বছরের প্রথম দিনই বই তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়। সেই থেকে নিরবিচ্ছিন্নভাবে ২০১৯ সালের আজকের এই দিনেও সারা দেশে প্রাক প্রাথমিক, প্রাথমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে ৩৩ কোটি বই তুলে দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ৩৩ কোটি বই বিতরণ হয়েছে। শুধু প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় বই বিতরণ করছে প্রায় তিন কোটি শিক্ষার্থীর মধ্যে ৷
সরকারের এমন উদ্যোগে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি খুশি অভিভাবকরাও। চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণীর শিক্ষার্থী আসিফ আকমলের বাবা আসিফুল আলম বলেন, এটি একটি অভাবনীয় উদ্যোগ। দেশের তিনশ’ আসনে নির্বাচনের সঙ্গে সরকারের পুরো প্রশাসন জড়িত ছিল। তদুপরি শিক্ষকদের বিশাল একটা অংশ দায়িত্ব পালন করেছেন নির্বাচনে। তবুও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বছরের প্রথম দিনেই আমাদের সন্তানদের হাতে নতুন বই তুলে দিতে পেরেছেন। এই কৃতিত্ব চাট্টিখানি কথা নয়। এটা কেবল বঙ্গবন্ধুকন্যার পক্ষেই সম্ভব হয়েছে। আমাদের সময়তো আমরা জানুয়ারি মাসেই বই পেতাম না।
এদিকে চট্টগ্রাম নগর ও জেলা মিলে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে প্রায় দুই কোটি নতুন বই বিতরণ সম্পন্ন হয়ে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসরিন সুলতানা জয়নিউজকে জানান, চট্টগ্রামে সরকারি-বেসরকারি ৪ হাজার ৭৩০টি প্রাথমিক ও কিন্ডারগার্টেন বিদ্যালয়ে প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থীর হাতে আমরা প্রায় ৪৮ লাখ নতুন বই পৌঁছে দিতে পেরেছি।
চট্টগ্রাম জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জসিম উদ্দিন জানান, জেলার ২০টি থানা ও উপজেলার ২ হাজার ৬৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় পৌনে ১২ লাখ শিক্ষার্থীর হাতে মাধ্যমিকের ১ কোটি ৫২ লাখ ৪৮ হাজার ৮৮১ টি নতুন বই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
জয়নিউজ