আওয়ামী লীগের শাসনামলে শিল্প কারখানায় গ্যাস সংযোগ পেতে ২০ কোটি টাকা ঘুষ দিতে হয়েছে জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন বলেছেন, শিল্প কারখানায় বিনিয়োগের পর গ্যাস পেতে নিজের টাকায় ৪০ কিলোমিটার পাইপলাইন স্থাপন করতে হয়েছে। এই পাইপলাইন নির্মাণে শুধু রোড কাটিং বাবদ আমি ২০ কোটি টাকা ঘুষ দিয়েছি। আর এই ঘুস দেওয়ার জন্যও আমাকে ঘুষ দিতে হয়েছে।
শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।
সেখ বশির উদ্দিন বলেন, গ্যাসের জন্য জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর বাসার সামনে আমাকে বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তার কাছ থেকে অনেক লেকচার শুনতে হয়েছে। মিনিমাম সম্মান পর্যন্ত পাইনি। তারপরও জ্বি স্যার, জ্বি স্যার বলতে হয়েছে। কিছু কিছু মানুষের সিটিস্ক্যান করে তাদের ব্রেন দেখার ইচ্ছা হচ্ছে আমার। মানুষ কীভাবে এত ক্রিমিনাল হতে পারে?
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমি জ্বালানি উপদেষ্টাকে এক মিটিংয়ে বলতে শুনেছি যে জ্বালানি খাত দুর্নীতির অন্যতম স্তম্ভ। সেখান থেকে আমাদের বের হতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ভোলার গ্যাসক্ষেত্রে আবিষ্কৃত গ্যাস সিএনজি বা এলএনজি ফরম্যাটে আনার জন্য আগামী ডিসেম্বরে দরপত্র আহ্বান করা হবে।
ফাওজুল কবির বলেন, ভোলায় ৭০ এমএমসিএফ গ্যাস পাওয়া গেলেও পাইপলাইন না থাকায় ওই গ্যাস ঢাকায় বা শিল্প এলাকায় আনা যাচ্ছে না। ভোলার গ্যাস ঢাকায় আনার জন্য আমরা ডিসেম্বরেই ওপেন টেন্ডার দিচ্ছি। আগ্রহী ব্যবসায়ীরা দরপত্রে অংশগ্রহণের মাধ্যমে এলএনজি বা সিএনজি ফরম্যাটে এই গ্যাস ঢাকায় আনতে পারবেন। ভোলার গ্যাস ঢাকায় আনা গেলে শিল্পে গ্যাসের সংকট কিছুটা হলেও কমবে।
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ভোলা থেকে গ্যাস আনার টেন্ডার আহ্বান করা হবে। এছাড়া ৯ ডিসেম্বর অফশোর বিডিং টেন্ডার ওপেন করা হবে। আগামী বছরের শুরুতেই বিশ্বের নাম করা জ্বালানি কোম্পানির সঙ্গে অফশোরের গ্যাস নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করতে পারব বলে আশা করি। তিনি বলেন, পাবর্ত্য এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস পাওয়ার বিপুল সম্ভাবনা আছে। এসব এলাকার গ্যাস অনুসন্ধানে অনশোর বিডিং ওপেন করার প্রস্তুতি চলছে। আশা করছি আগামী মার্চের মধ্যে অনশোর বিডিং করা সম্ভব হবে।
জেএন/এমআর