ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে চট্টগ্রামকে ক্লিন, গ্রিন, হেলদি সিটি হিসেবে গড়তে চান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।
সোমবার নগরীর কৃষ্ণকুমারী সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ ও কৃতী শিক্ষার্থী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন মেয়র।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, কৃষ্ণকুমারী সিটি কর্পোরেশন উচ্চ বিদ্যালয়ের এই ভবনটি কৃষ্ণকুমারীর নয় এই ভবনটি মিউনিসিপাল মডেল হাই স্কুলের। তোমাদের দাবি যৌক্তিক। পরের গৃহে থাকতে কার না ভালো লাগে! নিজের গৃহেই তো সবচেয়ে বড় সুখ।
এই স্কুলটি অত্যন্ত ঐতিহ্যবাহী ও পুরানো স্কুল। ১৯২৭ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয়। আমি ছাত্রীদের একটা সুখবর দিতে চাই। আশা করি নতুন বছরে তোমরা নতুন ভবনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।
স্কুল হেলথের যে কথাগুলো আমাদের ডাক্তাররা বলেছেন সেখানে আমি বারবার বলেছি যে মর্নিং ব্রেকফাস্ট উপর নজর দিতে হবে কারণ শিক্ষার্থীগন যখন সকালে স্কুলে যায় সে সময় থেকে চারটা পর্যন্ত তদের স্কুলে থাকতে হয়। কাজে মর্নিং ব্রেকফাস্ট যদি তারা না করে তাহলে তাদের ব্রেইনটা ঠিকমত কাজ করবে না ।
তিনি বলেন, অন্তত একটা ডিম কলা কিংবা দুধ সকালে তারা খেয়ে আসছে কিনা এ জিনিসটা নিশ্চিত করতে হবে। আমি চিন্তাভাবনা করছি স্কুলে একটা মিডডে মিল যদি দেয়া যায়। ডায়েট এন্ড নিউট্রিশন সাইকোলজিক্যাল গুলো আছে বাচ্চাদের অনেকের দেখা যায় যে স্কুলে অনেক অটিস্টিক বাচ্চা আছে আমরা হয়তো বুঝতে পারি না। এই জিনিসগুলো কিন্তু আমাদের মধ্যে আনতে হবে অনেক স্কুলে দেখা যায় কোন চাইল্ড সাইকোলজিস্ট নাই যেটা খুবই জরুরি। বাচ্চাদের যখন চিকিৎসা করি ওই জিনিসটাকে আমরা সবসময় উপলব্ধি করি। গুরুত্ত্বপূর্ণ কথা তোমাদের স্মার্টফোনের আসক্তি থেকে বের হয়ে আসতে হবে। নির্দিস্ট সময়ের বেশি ইলেক্ট্রিক ডিভাইস চালানোর ফলে আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের ব্রেইনে অনেক বড় ধরণের ক্ষতি হয়। সুতরাং স্মার্টফোনের ব্যবহার কমাতে হবে। মোবাইলে আসক্তি থেকে বের হয়ে শারীরিক খেলাধুলা চর্চা বাড়াতে হবে।
নৈতিক শিক্ষার উপর জোর দিয়ে ডা. শাহাদাত বলেন, জ্ঞান অন্বেষণ করো। জ্ঞানের অর্জনের কোন বয়স নেই। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমাদের শিখতে হবে। মানে পুরা জীবনেই আমাদের জ্ঞান অন্বেষণের জন্য সংগ্রাম করতে হয়। তবে এর মধ্যে যে জিনিসটি দরকার সেটি হচ্ছে ”নৈতিক” শিক্ষা। আমি একজন ডাক্তার হয়ে যখন একজন গরীব রোগীকে চিকিৎসা দেওয়ার মনোবৃত্তি থাকবে না, তখন আমার এ শিক্ষার কোন দাম থাকবে না। ওটা কোন আলোকিত শিক্ষা নয়। আলোকিত শিক্ষা হচ্ছে সেটা, যখন আমি ডাক্তার হয়ে গেলাম আমি একজন রোগীকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দিলাম, তাকে কিছু ওষুধ দিলাম, সেটাই হলো আলোকিত শিক্ষা এবং এই শিক্ষাটাই আমাদের দরকার। আমি তোমাদের শুধু এটুকুই বলব যে, সকলকে এ ধরনের ও নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। তাহলেই আমরা একদিন দুর্নীতিমুক্ত, সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়তে পারবো।
পরিচ্ছন্নতা বিষয়ে ছ্ত্রাদের প্রশিক্ষণ দিতে শিক্ষকদের ভূমিকা প্রত্যাশা করে মেয়র বলেন, আমি যেটার উপর জোর দিব সেটা হচ্ছে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা। পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। আপনারা ছাত্রদেরকে শিখাতে পারেন সবাইকে একটা চকলেট দিতে পারেন, চকলেটের কাভারটা ছেলেরা কোথায় ফেলছে তা পরিলক্ষণ করলেন। কাভারটা সে নিচে ফেলল না, ডাস্টবিনে ফেলল। যারা ডাস্টবিনে ফেলেছে তাদেরকে একটা শ্রেণী। আর যারা ডাস্টবিনে ফেলল না তাদেরকে আরেকটা শ্রেণী তৈরি করবেন। এবং তাদেরকে ওভাবে শিক্ষা দিতে হবে যেন সে পরবর্তীতে যাতে সেটা ডাস্টবিন ফেলে। কারণ এই স্কুল থেকে তাদেরকে শিক্ষা নিতে হবে। স্কুল এমন একটি জায়গা যেটার প্রতিচ্ছবি বা রিফলেকশন স্থায়ী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, শিক্ষা কর্মকর্তা মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তার, প্রধান শিক্ষক তমিজ উদ্দিন, আবু তালেব চৌধুরী বেলাল, শাহেদুল কবির চৌধুরী, আক্তার হোসেন, নিকাশ ধর, লুৎফুর নেছা খানম, শাহিনুর জাহান, আহমেদ হোসেন, বিপ্লব ভট্টাচার্য সহ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকা বৃন্দ।
জেএন/এমআর