কিশোরগঞ্জ শহরের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের এবার পাওয়া গেছে ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা। এটি এ যাবতকালে মসজিদটিতে দান হিসেবে গণনা করা সর্বোচ্চ টাকা।
পাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শওকত উদ্দিন ভূঁইয়া এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে গত ১৭ আগস্ট পাওয়া গিয়েছিল ৭ কোটি ২২ লাখ ১৩ হাজার ৪৬ টাকা।
আজ শনিবার সকাল ৭ টাকা থেকে গণনা শুরু হয়, গণনা শেষ হয়েছে সন্ধ্যা ৬টায়। এবার ১১টি দানবাক্স খুলে পাওয়া গিয়েছিল ২৯ বস্তা টাকা। দানবাক্সে বিদেশি মুদ্রা, সোনা-রুপার অলঙ্কার এবং বেশ কিছু চিঠি আর চিকুটও পাওয়া গেছে।
এদিন সকালে মসজিদ কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান, পুলিশ সুপার মো. হাছান চৌধুরীসহ অন্যান্য কর্মকর্তার উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এরপর টাকাগুলো সিনথেটিক বস্তায় ভরে মসজিদের দোতলার মেঝেতে ঢেলে মসজিদ কমিটি ও প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে গণনা শুরু করা হয়। প্রতি তিনমাস অন্তর দানবাক্স খোলা হয়। তবে এবার খোলা হয়েছে তিন মাস ১৩ দিন পর।
পাগলা মসজিদ কমপ্লেক্সের নূরুল কোরআন হাফিজিয়া মাদাসার ১২৮ জন ছাত্র, ৩৫ জন শিক্ষক ও স্টাফ, আল জামিয়াতুল ইমদাদিয়ার ১৫০ জন ছাত্র, রূপালী ব্যাংকের ৭৫ জন স্টাফ টাকা গণনার কাজে অংশ নিয়েছিলেন। ছোট ছোট শিক্ষার্থী এত বিপুল পরিমাণ টাকা গুণতে বেশ আনন্দ পায়। মাঝে মাঝে টাকাগুলো শূন্যে ছুঁড়ে দিয়ে সেই আনন্দ প্রকাশ করে তারা। এক ছাত্র দেখালো, কোন এক ব্যক্তি ৫০০ টাকার নোটের ব্যাংকে পিনআপ করা একটি বান্ডেল (৫০ হাজার টাকা) দিয়েছেন।
দেশি মুদ্রার পাশাপাশি পাওয়া গেছে বেশ কিছু বিদেশি মুদ্রা এবং সোনা-রুপার অলংকারও। কেউ কেউ ৫০০ টাকা নোটের বান্ডেলও (৫০ হাজার টাকা) দান করেছেন। পাওয়া গেছে মনোবাঞ্ছা পূরণের আর্তি প্রকাশ করা বহু চিঠি ও চিরকুটও। সার্বিক তদারকি ও নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন প্রশাসন ক্যাডারের ৯ জন কর্মকর্তা, ১০ জন সেনা সদস্য, ১৬ জন পুলিশ সদস্য ও ৯ জন আনসার সদস্য। গণনার ফাঁকে ফাঁকে প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে টাকাগুলো রূপালী ব্যাংকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
জেএন/এমআর