চট্টগ্রামের বিভিন্ন পাইকারি বাজারে শীতকালীন শাক-সবজির সরবরাহ গত সপ্তাহের তুলনায় অনেক বেড়েছে, ফলে কমতে শুরু করেছে দাম।
পাইকারি বাজারে সবজির দাম কমার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে খুচরা বাজারেও। গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে প্রত্যেক সবজির দাম গড়ে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমেছে বলে দাবি করেছেন বিক্রেতারা।
শুক্রবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বাজারে সবজি কিনতে আসা সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে দেখা গেছে। তবে মাছ ও ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমলেও পেঁয়াজ ও আলুর উচ্চ মূল্য স্থিতিশীল থাকায় কেউ কেউ ক্ষোভও প্রকাশ করেছেন।
চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার, বহদ্দারহাট, কাজীর দেউড়িসহ বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ সপ্তাহের বাজার প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়। যা গত সপ্তাহেও কেজি ৫০ টাকার বেশি দামে বিক্রি হয়েছিলো।
ঠিক একই ভাবে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা কমিয়ে বিক্রেতারা প্রতি কেজি করলা ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে ২৫-৩০ টাকা, কচুর লতি ৬০ টাকা, গাজর ৯০ টাকা, প্রতি পিস লাউ ৩০-৪০ টাকা, শিম ৮০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, ধুন্দল ৫০ টাকা, দেশি শসা ৫০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৮০ টাকা, কচুমুখী ৫০ টাকা, জালি কুমড়া ৩৫ টাকা পিস, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা কেজি, মূলা ৩০-৪০ টাকা ও কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে একশ টাকা কেজি দরে।
তবে কোন কোন বাজারে আগের ৭৫ টাকা কেজি আবার কোন বাজারে নতুন করে ৫ টাকা দাম বাড়িয়ে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে পুরনো আলু। একশ টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে নতুন আলু। শিমের বিচির কেজি ৩৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে এসব বাজারে।
নগরীর কাজির দেউরি বাজারে গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে কমেছে মাছের দাম। মাঝারি সাইজের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজি ২৫০-৩শ টাকা আর বড় সাইজের রুই বিক্রি হচ্ছে কেজি ৩৩০ থেকে ৩৬০ টাকায়। লইট্ট্যার কেজি ১৯০ টাকা, কাতল মাছ ৩৫০ টাকায় বিক্রি করছেন বিক্রেতারা।
তাছাড়া বড় সাইজের পাঙাশ ২০০-২২০ টাকা, পোয়া মাছ ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২০০ টাকা, শিং ৪০০-৫০০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, রূপচাঁদা ৫৫০-৬৫০, তাইল্লে মাছ আকারভেদে ৫০০-৭০০, বেলে ২৮০-৪০০ এবং মৃগেল ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ বাজারে ৫শ-৬শ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে চিংড়ি ও দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫শ টাকায়। বিক্রেতারা বলছেন, নদীর মাছের সরবরাহ ভালো থাকায় গত সপ্তাহের তুলনায় এ সপ্তাহে মাছের দাম কিছুটা কমেছে।
মাংসের বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০-১৭৫ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ১৮০-১৮৫ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৬০-২৭০ টাকা, লাল কক ৩৫০ টাকা এবং দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকায়।
তবে, গরুর মাংস আগের মতোই হাড়সহ ৭৫০ এবং হাড় ছাড়া ৮শ টাকা ও খাসির মাংস ১১শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজি, মাছ ও ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা কমলেও পেঁয়াজের উচ্চ মূল্য স্থিতিশীল রয়েছে। মানভেদে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০৫-১১৫ টাকা। এদিকে, রসুন বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা কেজি দরে, দেশি আদা ১২০ টাকা, আমদানি করা আদা ২শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারে কেনাকাটা করতে আসা গৃহিণী মিসেস লাকী জানালেন, গত সপ্তাহের তুলনায় আজকের বাজারে দাম একটু কমায় চাহিদামত কেনাকাটা করতে পেরেছি। আশা রাখি, আগামী সপ্তাহে দাম আরও কমবে।
চকবাজারের পাইকারি বিক্রেতা আলি সওদাগর বলেন, সবজির উৎপাদন ও সরবরাহ ভালো থাকায় দাম কমেছে, আরো কমবে। ন্যায্যমূল্যে ক্রেতাদের হাতে সবজি তুলে দিতে পারলেও ব্যবসাও বাড়ে, আমরাও খুশি।
জেএন/পিআর