প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, আমরা এক ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে আছি। বিগত বছরগুলোতে সততার বদলে অসততা, অধিকারের বদলে বঞ্চনা, বিচারের বদলে নিপীড়ন, আশ্রয়ের বদলে নির্যাতনকে স্বাভাবিক ঘটনা হিসেবে দেখা হয়েছে। রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘সুশাসনের জন্য জনসম্পৃক্ত সংস্কার: অসুবিধাগ্রস্ত জনগোষ্ঠীর আকাঙ্খা’ শীর্ষক আয়োজিত নাগরিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
দেশের ক্রান্তিলগ্নের বর্তমান ভগ্নদশা থেকে বিচার বিভাগও মুক্ত নয় বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পর আপনারা সারাদেশের হদযে ভগ্নদশা দেখেছেন, সেই অবস্থা আমাদের বিচার বিভাগেও আছে। আমরা যথাযথ সংস্কারের চেষ্টা করছি। এমনকি আপনাদের আশস্ত করে বলতে চাই, বিচার বিভাগের কিছু প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের মাধ্যমেই আমাদের যাত্রা শুরু হয়েছে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা তাদের জীবনবাজি রেখে আমাদের নতুন স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। ছাত্র-জনতার এই বিপ্লব আমাদের নির্যাতিত ও নিপীড়িত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অপার সুযোগ করে দিয়েছে। এই সুযোগের সদ্ব্যবহার আমাদের করতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে, ন্যায়বিচার যাতে বিলম্বিত না হয়। একইসঙ্গে আমাদের নাগরিক অধিকার রক্ষায় আরও উদ্যোগী হতে হবে। যদি নাগরিক অধিকার রক্ষিত না হয়, তাহলে পিছিয়েপড়া জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষিত হবে না। আর তা না হলে স্বাধীনতার মূল আকাঙ্খা পূরণেও আমরা ব্যর্থ হব।
সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেন, সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের আগামী দিনে এগিয়ে নেওয়া না হলে ৫ আগস্ট যারা প্রাণ ও ত্যাগ করেছে, তা কোনো কাজে আসবে না। যেই মানুষগুলো কষ্টে আছে তাদের কথা তুলে ধরলে এবং তাদের জীবনযাত্রার পরিবর্তন নিয়ে আসলেই আমাদের কাঙ্খিত সফলতা আসবে।
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র নেতৃত্বাধীন বিপ্লবের দৃঢ়চেতনাকে স্মরণ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, জুলাই বিপ্লব নিপীড়নকে উৎখাত এবং ন্যায়বিচার, সাম্য ও মানবতা পুনরুদ্ধারের লড়াই। আমাদের ইতিহাসের এই সংজ্ঞায়িত মুহূর্তগুলো মনে করিয়ে দেয় যে, ন্যায়বিচারের সন্ধান একটি ক্ষণস্থায়ী প্রচেষ্টা নয় বরং একটি আজীবন প্রতিশ্রুতি যা আমাদের বিচারিক মিশনের ভিত্তি তৈরি করে।
পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে প্রাধান্য দিতে হবে: ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
এ সময় সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ও শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রধান ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, দেশের গণতন্ত্রকে সুসংহত ও শক্তিশালী করতে অন্তর্বর্তী সরকারের সংলাপ অব্যাহত রাখতে হবে। সকলের জন্য সংলাপের দুয়ার খোলা রাখতে হবে। একইসঙ্গে সুশাসনের জন্য সংস্কার অব্যাহত রাখতে হবে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে প্রাধান্য দিতে হবে।
জেএন/এমআর