রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় কারাগারে বন্দী বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীর হয়ে আইনি লড়াই চালাতে আসা ঢাকার সেই আইনজীবী বৃহস্পতিবারও চট্টগ্রাম আদালতে উপস্থিত হয়েছিলেন।
সকালে মহানগর দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলামের আদালতে ওকালতনামা জমা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ। তিনি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জামিন শুনানি এগিয়ে আনার আবেদন করেন।
তবে চিন্ময় ব্রহ্মচারীর মামলা লড়তে ওকালতনামা জমা দেওয়া চট্টগ্রামের আইনজীবী সুমীত আচার্য্যকে তিনি উপস্থিত করতে না পারায় জামিন শুনানির জন্য ২ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।
এর আগে দুপুর আড়াইটার দিকে আদালত শুনানি কার্যক্রমের শুরুতে ওকালতনামা দাখিল করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বাংলাদেশ মাইনরিটি ওয়াচের সভাপতি রবীন্দ্র ঘোষ।
এ সময় ওকালতনামা যাচাইয়ের জন্য ওই আইনজীবীকে উপস্থিত করতে আদালত সময় বেঁধে দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওই আইনজীবী উপস্থিত হননি। তাই চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলামের চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন শুনানির জন্য ২ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক জানান, হাইকোর্টের স্পষ্ট রুলিং আছে যে লোকাল বারের আইনজীবী যদি ওনাকে অ্যানগেজড করেন সেক্ষেত্রে ওনি ওনার সাথে অ্যাসিস্ট করতে পারেন। এটা চট্টগ্রাম বারের না শুধু এটা সারা বাংলাদেশের নিয়ম। ওনি এটা ফলো না করে মামলা মুভ করতে এসেছেন।
এর আগেও গত বুধবার আসামির পক্ষে ওকালতনামা না থাকায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন শুনানির তারিখ এগিয়ে আনাসহ তিন আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের এ আইনজীবীর করা তিনটি আবেদনই খারিজের আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক সাইফুল ইসলাম।
প্রসঙ্গত, কোতোয়ালী থানায় হওয়া একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় চিন্ময়কে গ্রেপ্তার দেখিয়ে গত ২৬ নভেম্বর হাজির করা হলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেন।
পরে তাকে কারাগারে নেওয়ার সময় তাকে বহন করা প্রিজন ভ্যান আটকে রেখে প্রায় তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন তার কয়েকশ অনুসারী।
এক পর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়।
এ সময় আদালত প্রাঙ্গনে সরকারি-বেসরকারি ২০টি গাড়িসহ বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থাপনা ভাঙচুর করে বিক্ষুদ্ধরা।
তাছাড়া একই দিন কোতোয়ালী থানাধীন রঙ্গম সিনেমা হলের গলিতে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
আদালত এলাকায় সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও পুলিশের কাজে বাধাদানের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি এবং নিহত সাইফুলের বাবা ও ভাই দুটিসহ মোট পাঁচটি মামলা দায়ের হয়। এতে ৭৬ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও ১ হাজার ৪শ জনকে আসামি করা হয়।
এ দিকে গত রবিবার (৮ ডিসেম্বর) চিন্ময় অনুসারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় একজন ‘হেফাজতকর্মী’চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে প্রধান আসামি করে ১৬৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৪শ থেকে ৫শ জনকে আসামি করে পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করেন।
জেএন/পিআর