আরাকান আর্মির দখলে মংডু, বাংলাদেশ সীমান্তে সতর্কতা

দেশজুড়ে ডেস্ক

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)।

- Advertisement -

টানা ১১ মাসের সংঘাত শেষে গত রোববার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে মংডু টাউনশিপের দক্ষিণে অবস্থিত বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) সর্বশেষ ৫ নম্বর সীমান্ত ব্যাটালিয়নটি দখল করে তারা।

- Advertisement -google news follower

মংডু আরাকান আর্মির দখলে যাওয়ার পর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের দুই পারেই রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়েছে।

রাখাইন রাজ্যে প্রায় পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা এখনো বাস করছে, যাদের সঙ্গে আরাকান আর্মির বিরোধ রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে রাখাইন থেকে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার আশঙ্কা বাড়ছে।

- Advertisement -islamibank

এ কারণে বাংলাদেশ সীমান্তে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের টহল জোরদার করা হয়েছে।

নাফ নদীতে নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
মংডু দখলের পর আরাকান আর্মি নাফ নদীতে নৌ চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এর ফলে টেকনাফ-সেন্ট মার্টিন নৌপথে যাত্রীবাহী ট্রলার ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

বর্তমানে পর্যটকেরা সেন্ট মার্টিন দ্বীপে যেতে কক্সবাজারের নুনিয়াছটার বিআইডব্লিউটিএ জেটি ব্যবহার করছেন।

নৌ চলাচল বন্ধ থাকায় সেন্ট মার্টিন দ্বীপে খাদ্য সংকটের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এ ছাড়া, টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমার থেকে আমদানি পণ্য পরিবহনও বন্ধ রয়েছে।

সীমান্তে সতর্কতা ও নিরাপত্তা জোরদার
মিয়ানমারের মংডুর সঙ্গে বাংলাদেশের ২৭০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে, যা নাফ নদী দ্বারা বিভক্ত।

মংডু দখলের পর সীমান্তে গোলাগুলি বন্ধ থাকলেও টেকনাফসহ পুরো এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিজিবি ও কোস্টগার্ড সীমান্তে কড়া পাহারা দিচ্ছে।

বাংলাদেশের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, “রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সীমান্তে কঠোর অবস্থান নেওয়া হয়েছে। মিয়ানমারের কাউকেই নতুন করে শরণার্থী হিসেবে গ্রহণ করা হবে না।”

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে অনিশ্চয়তা
বর্তমানে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি ক্যাম্পে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ। তবে গত সাত বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি।

রোহিঙ্গা নেতা মোহাম্মদ জোবায়ের জানান, মংডু আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণে থাকা অবস্থায় রাখাইনে থাকা পাঁচ লাখ রোহিঙ্গার নিরাপত্তা ঝুঁকি আরও বাড়বে।

এতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া থেমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার উখিয়ার বিভিন্ন আশ্রয়শিবির পরিদর্শন শেষে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. জিয়াউদ্দীন রোহিঙ্গা-সংক্রান্ত সমন্বয় কমিটির সভায় অংশ নেন। সভায় রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করা হয়।

মংডুর বর্তমান পরিস্থিতি বাংলাদেশ-মিয়ানমার দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

জেএন/পিআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM