রেস্টুরেন্টের সুস্বাদু খাবারেই যেন মন পড়ে থাকে। ঘরের খাবার ভালো লাগে না। একটা বার্গার, পিৎজা কিংবা হটডগ, সাথে এক বোতল কোমল পানীয়। এতেই আমাদের মন জুড়ায়। কিন্তু মন জুড়ানো এসব ফাস্টফুড কিংবা কোমল পানীয় একটু একটু করে কেড়ে নিচ্ছে আমাদের জীবন। সম্প্রতি এমনই ভয়ংকর এক তথ্য উঠে এসেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একদল গবেষকের গবেষণায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, একটি হটডগ মানুষের আয়ুষ্কাল ৩৬ মিনিট কমিয়ে দেয়। আর এক বোতল কোক আমাদের জীবন কেড়ে নেয় ১২ মিনিট। একটি চিজবার্গার ৯ মিনিট এবং একটি বেকনের ফালি মানুষের ৯ মিনিট আয়ু কমিয়ে দেয়।
যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক লুইস আলবের্তো জামোরা ও তার নেতৃত্বাধীন বিশেষজ্ঞ দল সম্প্রতি এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছেন। আন্তর্জাতিক এক বিজ্ঞান সাময়িকীতে সেই গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এই গবেষণায় বিশেষজ্ঞরা এমন বেশ কিছু খাদ্যপণ্যের তালিকা করেছেন যেগুলো মানুষের জীবনের জন্য ক্ষতিকর। একইসঙ্গে মানুষের আয়ুষ্কাল বাড়াতে সক্ষম—এমন খাদ্যপণ্যেরও তালিকা করেছেন তারা।
গবেষণায় বিশেষজ্ঞদল যুক্তরাষ্ট্রে সহজলভ্য ৫ হাজার ৮০০ টিরও বেশি খাদ্য ও পানীয়ের ওপর অনুসন্ধান চালিয়েছেন। পরিচালিত বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান ও তার ফলাফল পর্যালোচনার ভিত্তিতে এ দুই তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। গবেষকরা দেখেছেন, মানুষের আয়ুষ্কাল হ্রাসের ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে ফাস্টফুড শ্রেণিভুক্ত বিভিন্ন খাদ্য-পানীয় এবং প্রক্রিয়াজাত-অতিপ্রক্রিয়াজাত খাদ্য ও মাংস।
গবেষকরা বলছেন, মানুষের আয়ুষ্কাল কমিয়ে দেওয়ার জন্য খাদ্যপণ্যে থাকা ক্যালরি, চিনি, লবণ ও অন্যান্য উপাদান দায়ী। রেস্টুরেন্টের খাবারে এসব উপাদান বেশি থাকে। তবে শাকসবজি এবং ঘরে তৈরি খাবারে ক্ষতিকর উপাদান কম থাকে। এ ছাড়া পিনাট বাটার এবং ঘরে তৈরি জ্যাম-জেলির স্যান্ডউইচও ক্ষতিকর নয় বলে জানিয়েছেন তারা।
গবেষণায় বলা হয়েছে, যারা প্রতিদিন গরু কিংবা প্রক্রিয়াজাত মাংস খেতে অভ্যস্ত, তারা যদি প্রতিদিনের সংগৃহীত ক্যালরির মাত্র ১০ শতাংশ মাংসের পরিবর্তে শাকসবজি-ফলমূল থেকে সংগ্রহ করেন, সেক্ষেত্রে তাদের মোট আয়ুষ্কালের সঙ্গে অন্তত ৪৮ মিনিট যোগ করতে পারবেন।
গবেষক দলের আরেকজন সদস্য সাংবাদিকদের বলেন, আমরা একেবারেই ছোট পরিসরে গবেষণাটি করেছি। আরও বড় পরিসরে করলে হয়তো অনেক তথ্য জানা যেত। তবে এই গবেষণার মাধ্যমে আমরা একটি পরিষ্কার বার্তা দিতে চেয়েছি; আর তা হলো- সুস্থ থাকতে চাইলে এবং বেশিদিন বাঁচতে চাইলে খাদ্যাভ্যাস বদলাতে হবে।
জেএন/এমআর