মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের অস্থিরতার কারণে কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে সে দেশ থেকে পণ্য আমদানি ৯০ ভাগ কমে গেছে।
ব্যবসায়ীরা আশানুরূপ পণ্য আমদানি করতে না পেরে হতাশায় ভুগছেন। এ ঘটনায় সরকার শতশত কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছেন।
টেকনাফ সিএন্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক এহেতাশামুল হক বাহদুর বলেন, মিয়ানমার রাখাইনে আরাকান আর্মি ও দেশটির সেনাবাহিনীর মধ্যেই সংঘর্ষের কারণে সে দেশ থেকে আগের চেয়ে পণ্য আমদানি ৯০ ভাগ কমে গেছে।
এখনো প্রতি মাসেও ঠিকমতো পণ্য আমদানি করা যাচ্ছে না। সংঘাতের আগে কোটি কোটি টাকার পণ্য আমদানি করা যেত, এতে করে সরকারও কোটি কোটি টাকার রাজস্ব পেয়েছেন।
এখন যেহেতু রাখাইন রাজ্যের মংডু শহরসহ গুরুত্বপূর্ণ জায়গা আরাকান আর্মি দখলে নিয়েছে, সে ক্ষেত্রে টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। আগে মংডু শহর থেকেও পণ্য আমদানি করা হতো।
এখন যেসব পণ্য আসছে, সেগুলো আকিয়াব ও ইয়াং গুন শহর থেকে, তাও ১০ ভাগ আসছে। এখন মংডু শহর থেকে পণ্য আমদানি বন্ধ রয়েছে বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা বি এম আব্দুল্লাহ আল মাসুদ বলেন, রাখাইন রাজ্যের অস্থিরতার কারণে পণ্য আমদানি কমে গেছে। এই বছরের গত পাঁচ মাসের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পণ্য আমদানির পরিমাণ ৮৩৯৭.৯২ মেট্রিক টন আমদানি পণ্যের মোট মূল্য ৮৩ কোটি ৫১ লাখ ৫৯ হাজার ৪৯১.৩ টাকা আদায়কৃত মোট রাজস্ব ৬৪ কোটি ১৯ লাখ ১৬ হাজার ৩৫৯ টাকা। শুঁটকি মাছ, বরফায়িত তাজা মাছ, কাঠ, সুপারি, আচার এসব পণ্য আমদানি হচ্ছে বলে তিনি জানান।
উল্লেখ্য, গত ১১ মাস ধরে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ এবং ঘুমধুম সীমান্তের ওপারের মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য দখল নিতে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মি যুদ্ধ করছেন।
এই যুদ্ধে আরাকান আর্মি বাংলাদেশের সঙ্গে থাকা রাখাইনের ২৭০ কিলোমিটার সীমান্ত ও চৌকি, সেনা ও বিজিপি ও পুলিশ ক্যাম্পসহ রাখাইনের মংডুসহ গুরুত্বপূর্ণ শহর তারা পুরোপুরি দখলে নিয়েছেন।
বিশেষ করে টেকনাফের ওপারের সীমান্তে একটানা পাঁচ থেকে ছয় মাস যুদ্ধ, এবং এ যুদ্ধের কারণে এখনো সীমান্তে অস্থিরতা ও উত্তেজনা পরিস্থিতি বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।
জেএন/পিআর