চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে সামশুল আলম (৪০)। গত ২১ ডিসেম্বর পটিয়ার পূর্ব হাইদগাঁও গ্রামের ভাঙ্গাপুল এলাকায় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয়েছিলেন তিনি। এরপর থেকেই সে সংকটাপন্ন অবস্থায় হাসপাতালের আইসিইউতে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন।
দরিদ্র কৃষক সামশুর দুই সন্তান কানিজ ফাতিমা (১১) ও মোহাম্মদ ইব্রাহিম (৭) আইসিইউর বাইরে বসে কান্না করছে। চিকিৎসার ব্যয় বহন করার মতো তাদের কেউ নেই। দুশ্চিন্তায় বাকরুদ্ধ স্ত্রী সুমি আকতার (২৭)।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এমন করুণ দৃশ্য দেখা যায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে। সামশুল আলমের স্ত্রী সুমি আকতার বলেন, আমার স্বামীর কোন অপরাধ ছিল না। তিনি গত ২১ ডিসেম্বর বিকাল ৪ টায় ঘর থেকে বের হয়ে পটিয়া পৌরসভা এলাকায় বাজারে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে হাইদগাঁও ভাঙাপুল এলাকায় পৌছালে পূর্ব পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ওৎ পেতে থাকা স্থানীয় সন্ত্রাসী ইউনুছ প্রকাশ বাচার নেতৃত্বে ১৫/১৬ জন তার উপর লোহার বড়, হাতল ও কিরিচ দিয়ে হামলা চালায়। এই সময় লোহার রড কিরিচের আঘাতে তার মাথা তেতলে যায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে মারাত্মকভাবে জখম হয়। বেদড়ক পিটানোর পর মৃত্যু হয়েছে ভেবে রাস্তার পাশে ফেলে যায় তাকে। হামলার সময় শত শত লোকজন বেরিয়ে আসলেও ওই সন্ত্রাসীদের ভয়ে কেউ তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি।
সুমি আকতার বলেন, পরে এলাকাবাসী আমার স্বামীকে মুমূর্ষু অবস্থায় পটিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন। এরপর থেকেই তিনি আইসিইউতে ভর্তি রয়েছেন।
সুমি আকতারের অভিযোগ, তাদের একটি জায়গা ভুমিদস্যু মোহাম্মদ ইউনুচ নানাভাবে গ্রাস করতে চেয়েছিল। আমার স্বামী বাধা হয়ে দাঁড়ানোর কারণে এর আগেও ১৪ নভেম্বর তার উপর নির্মম নির্যাতন চালায়। যার প্রেক্ষিতে তিনি পটিয়া থানায় একটা অভিযোগ দায়ের করেন।
এদিকে ২১ ডিসেম্বর শামশুল আলমের উপর হামলার ঘটনায় তার স্ত্রী সুমি আকতার বাদি হয়ে ২২ ডিসেম্বর একটি মামলা করেছেন। মামলায় ইউনুছ প্রকাশ বাচা (৪০), মোঃ নাছির (৪২), মোঃ রফিক (৪৪), মোঃ মাইনু (২৫), মোঃ রাজ (২০), রিদ্দু (২২), মোঃ মারুফ (২৫), আবু মোরশেদ (৩৫), মোঃ মুছা (৪৫), আবু সিদ্দিক প্রকাশ মিন্টু (৪০), আবু তালেব (৪২), মোঃ কামাল (৪০), মো ওসমান (৪০), মোস্তাক (৪২), ফরিদ (৫০) ও, মোঃ জাফরকে (৪৪) আসামি করা হয়েছে।
সুমির অভিযোগ, আসামিরা মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছেন। তারা মোবাইলে কল দিয়ে ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে। এলাকায় অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে। আমরা অসহায়।
এ বিষয়ে পটিয়া থানার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক অনিক বলেন, ঘটনার পর আমরা মামলার প্রধান আসামি ইউনূচ প্রকাশ বাচাসহ দুইজনকে গ্রেফতার করেছি। বাকীদের ধরতে পুলিশ তৎপরতা চালাচ্ছে।
জেএন/এমআর