দক্ষিণ কোরিয়ার বিমানবন্দরে ১৮১ আরোহী নিয়ে অবতরণের সময় রানওয়েতে ছিটকে পড়ে একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। এ ঘটনায় অন্তত ৬২ জন নিহত হয়েছেন।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) ভোরে মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে ১৭৫ জন যাত্রী এবং ৬ জন ক্রু নিয়ে জেজু এয়ার নামের বিমান পরিবহন সংস্থার একটি ফ্লাইট দুর্ঘটনায় পড়ে।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেজু এয়ারের ফ্লাইট ৭ সি-২২১৬ স্থানীয় সময় আজ রোববার সকাল ৯টা ৭ মিনিটে মুয়ান বিমানবন্দরে অবতরণের সময় দুর্ঘটনার শিকার হয়।
উদ্ধারকারীরা বিমানের লেজের অংশে আটকে থাকা যাত্রীদের বের করে আনার চেষ্টা করছেন। দুজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে এবং তাঁদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। উদ্ধার অভিযান এখনো চলছে। আহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রানওয়ে থেকে ছিটকে পড়ার পর বিমানটি দেয়ালে আঘাত করলে সঙ্গে সঙ্গেই আগুন ধরে যায়।
স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা গেছে, বিমানটির ল্যান্ডিং গিয়ার কাজ না করায় এটি রানওয়ে বরাবর অনেক দূর পর্যন্ত ছেঁচড়ে যায় এবং দেয়ালে আঘাতের ফলে বিমানটিতে আগুন ধরে যায় এবং এর ধ্বংসাবশেষ ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন দিকে।
ফ্লাইট ট্র্যাকিং-বিষয়ক ওয়েবসাইট ফ্লাইটরাডার-২৪ জানিয়েছে, বিমানটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের। বোয়িং কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
এদিকে, বিমানটির মালিক সংস্থা জেজু এয়ারের মুখপাত্র জানিয়েছেন, তাঁরা দুর্ঘটনার কারণ তদন্ত এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন।
এদিকে, এ দুর্ঘটনার পর দক্ষিণ কোরিয়ার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট চোই সুং-মোক জরুরি ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন।
তাঁর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তিনি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন এবং সর্বাত্মক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিমানের ধ্বংসাবশেষ থেকে ধোঁয়া ও আগুন বের হতে দেখা গেছে। ফায়ার ব্রিগেড ও উদ্ধারকর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং উদ্ধারকাজ শুরু করেন।
দুর্ঘটনার কারণ এখনো পরিষ্কার নয়। তবে তদন্তকারীরা ধারণা করছেন, ল্যান্ডিং গিয়ার কাজ না করার কারণে এটি ঘটেছে। বোয়িং ৭৩৭-৮০০ মডেলের বিমানের পূর্বে এ ধরনের যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা গেছে কি না, সেটিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে এ দুর্ঘটনা ঘটল। শুক্রবার নতুন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করা চোই সুং-মোক এই প্রথম এমন একটি জাতীয় সংকট মোকাবিলা করছেন।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। উদ্ধারকাজ শেষ হলে নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করে তাদের পরিবারের কাছে খবর দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
জেএন/পিআর