প্রথম ইনিংসে যেখানে চার ছক্কার ঝড় উঠেছিল, দ্বিতীয় ইনিংসে সেখানেই যেন ব্যাটারদের জন্য বধ্যভূমি। মিরপুরে দিনের প্রথম ম্যাচে দুর্বার রাজশাহীকে ১০৫ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়ে আসরে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে এসে জয়ের খাতা খুললো চিটাগং কিংস। রানের হিসেবে বিপিএলের ইতিহাসে যৌথভাবে এটি দ্বিতীয় বড় জয়।
মিরপুর শের-ই-বাংলায় টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের ওপেনার উসমান খানের সেঞ্চুরিতে ভর করে রেকর্ড ২১৯ রানের পুঁজি পেয়েছিল চট্টগ্রাম। বড় টার্গেট তাড়ায় মুখ থুবড়ে পড়েছে দুর্বার রাজশাহী। শেষ পর্যন্ত তারা অলআউট হয়ে গেছে মাত্র ১১৪ রানেই।
২২০ রানের রেকর্ড টার্গেট তাড়ায় প্রথম ওভারেই হোঁচট খায় রাজশাহী। ৫ বলে ৮ রান করে শরিফুলের শিকার হন সাব্বির হোসেন। ঝড় তোলার চেষ্টায় ছিলেন আরেক ওপেনার মোহাম্মদ হারিস। ১৫ বলে ৩২ রানের ইনিংস খেলে তিনিও বিদায় নেন। চিটাগংয়ের বোলারদের তোপে এরপর আর কেউই থিতু হতে পারেননি।
ফর্মে থাকা ক্যাপ্টেন এনামুল হক বিজয়ও এদিন মোটে ৮ রান করে সাজঘরে ফিরেছেন। সুবিধা করতে পারেননি ইয়াসির রাব্বি ও রায়ান বার্লরাও। ১৭.১ ওভারে ১১৪ রানেই অলআউট হয়ে যায় রাজশাহী। তিনটি করে উইকেট পান আরাফাত সানি ও আলিস ইসলাম।
এর আগে প্রথম ইনিংসে ব্যাট হাতে দর্শকদের ভালোই বিনোদন দিয়েছেন চিটাগংয়ের ওপেনার উসমান খান। টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই প্রথম উইকেট হারিয়েছিল কিংসরা। তাসকিন আহমেদের বলে সাব্বির হোসেনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন পারভেজ হোসেন ইমন। এরপরের গল্পটা কেবলই উসমান খানের। দুর্বার রাজশাহীর বোলারদের ওপর দিয়ে ঝড় বইয়ে দিয়েছেন পাকিস্তানের এই ওপেনার।
উসমানকে অন্য প্রান্তে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন ইংলিশ ব্যাটার গ্রাহাম ক্লার্ক। দুজনে মিলে দ্বিতীয় উইকেটে ৬৩ বলে ১২০ রানের জুটি গড়েন। যদিও ২৫ বলে ব্যক্তিগত ৪০ রানের মাথায় সোহাগ গাজীর বলে ফিরতে হয় ক্লার্ককে।
তৃতীয় উইকেটে মোহাম্মদ মিঠুনকে নিয়ে ৬৩ রানের জুটি গড়েন উসমান। নিজের রানটাও ততক্ষণে ফিফটি ছাড়িয়ে সেঞ্চুরির পথে। শেষ পর্যন্ত ম্যাজিক ফিগারের দেখা পেয়েছেনও। ৪৮ বলে বিপিএল ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় শতক হাঁকালেন। ২০২৩ বিপিএলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়ে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন উসমান খান। আজ চিটাগাং কিংসের হয়ে দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের দেখা পেলেন।
শেষ পর্যন্ত উসমান খান থামেন ৬২ বলে ১২৩ রানের মাথায় তাসকিনের শিকার হয়ে। অন্যপ্রান্তে কেউ সেভাবে আর বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। ব্যর্থ হয়েছেন শামীম পাটোয়ারীও। নির্ধারিত ওভারে ৫ উইকেটে ২১৯ রানে থামে চট্টগ্রাম। বিপিএল ইতিহাসে মিরপুর শের-ই-বাংলায় এটিই দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড। এর আগে মিরপুরে ২১৮ রানের রেকর্ড সংগ্রহ ছিল খুলনার। ২০২০ বিপিএলে কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের (কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের তৎকালীন নাম) বিপক্ষে এমন ইনিংস খেলেছিল তারা।
জেএন/এমআর