লন্ডনের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ার আগে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) রাতে বিমানবন্দর থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে বিদায় দিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন কামনা করেছেন দেশের মানুষ যেন ভালো থাকে। গণতন্ত্র যাতে পুনরুদ্ধার হয়, সে বিষয়ে আমরা যেন সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের নির্যাতনে এবং মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে তাকে ছয় বছর আটক করে রাখা হয়। এই আটক করে রাখার সময় তিনি অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়েন। আমরা ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধান হাসিনাকে অনুরোধ করেছিলাম, তাকে বাইরে চিকিৎসা করতে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু এই ফ্যাসিস্ট হাসিনা কোনো কথাতেই কর্ণপাত করেননি।’
তিনি বলেন, ‘আল্লাহর অশেষ রহমতে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে হাসিনা দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর আজ দেশনেত্রী সব মিথ্যা মামলা থেকে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গেছেন। এজন্য আল্লাহর কাছে অশেষ শুকরিয়া।’
বিএনপি চেয়ারপারসনের ফিরে আসা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আশা করছি সুচিকিৎসা নিয়ে বেগম খালেদা জিয়া আবার দেশের মানুষের কাছে ফিরে আসবেন।’
কোনো রাজনৈতিক বার্তা দিয়েছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক বার্তা বলতে তিনি দেশের মানুষের ভালো থাকার কামনা করেছেন এবং গণতন্ত্র যেন পুনরুদ্ধার হয়, সে বিষয়ে আমরা সবাই যেন ঐক্যবদ্ধ থাকি সেই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।’
বিমানবন্দরে দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা খালেদা জিয়াকে বিদায় জানান। দলের চেয়ারপাসনকে বিদায় জানাতে বিকেল থেকেই বিমানবন্দর সড়কের দুই পাশে অবস্থান নেন বিএনপির হাজার হাজার নেতাকর্মী। বিদায় জানানোর সময় জনদুর্ভোগ এড়াতে ঢাকা মহানগর বিএনপি ও এর সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আগেই বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তবে তাতেও দুর্ভোগ পুরোপুরি এড়ানো যায়নি। বিএনপির নেতাকর্মীদের সুশৃঙ্খলভাবে রাস্তার ফুটপাতে দাঁড়িয়ে খালেদা জিয়াকে বিদায় জানানোর জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। কিন্তু নেতাকর্মীদের অনেকে রাস্তায় নেমে আসেন।
চিকিৎসা শেষে বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান একসঙ্গে দেশে ফিরবেন এমন প্রত্যাশা করছেন দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। দলের চেয়ারপারসনকে বিদায়ী শুভেচ্ছা জানাতে এসে দলটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব-উন-নবী খান সোহেল বলেন, ‘বিগত সরকারের সময় আমরা বারবার আবেদন করেছিলাম। আওয়ামী লীগ সরকার প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি, চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেনি। দেশের ১৬ কোটি মানুষ দোয়া আমাদের নেত্রী যেন সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসেন। এটা আমাদের সবার প্রত্যাশা।’
বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, ‘দেশের মানুষের প্রত্যাশা চিকিৎসা শেষে মা ও ছেলে একসঙ্গে দেশে আসবেন।’
মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া এ দেশের মানুষের আবেগের জায়গা। আমাদের নেতা তারেক রহমান মাকে নিয়েই দেশে ফিরবেন, এটা আমাদের আশা।’
জেএন/এমআর