চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন টার্মিনাল, ইয়ার্ড ও শেডে দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা ৩৬টি কনটেইনারে আসা পচনশীল পণ্য হিমায়িত চিংড়ি, আদা, হিমায়িত মাংস, পশুখাদ্য ও মাছ ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
নিলাম অযোগ্য এসব পণ্যের ধ্বংসের কাজ গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বন্দর কর্তৃপক্ষের মালিকানাধীন রিপাবলিক ক্লাবের পেছনে বড় গর্ত খুঁড়ে এসব খাবার ও ব্যবহারের অনুপযোগী পণ্য মাটি চাপা দেওয়া হচ্ছে।
ধ্বংস কার্যক্রমে কাস্টমস এবং বন্দরের যৌথ উদ্যোগ জনস্বাস্থ্য রক্ষা এবং পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
মেসার্স কে এম কর্পোরেশন ধ্বংস কার্যক্রমে লজিস্টিক সরবরাহ করে সহায়তা করছে।
জানা গেছে,ধ্বংসের তালিকায় থাকা ৩৬টি কনটেইনারের মধ্যে ২০০৯, ২০১০ ও ২০১১ সালের কন্টেনারও রয়েছে।
নিলাম অযোগ্য পণ্যের ধ্বংস কার্যক্রমের বিষয়ে কে এম কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মোরশেদ জানান, চট্টগ্রাম বন্দর ও বিভিন্ন প্রাইভেট আইসিডি থেকে দীর্ঘদিন ধরে খালাস না নেওয়া ৩৬টি কনটেইনারের পচনশীল পণ্য কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় বৃহস্পতিবার থেকে ধ্বংস করার কাজ শুরু হয়েছে। সব কনটেইনারের পণ্য ধ্বংস করতে কয়েকদিন সময় লাগতে পারে।
কাস্টম সংশ্লিষ্টরা জানান, একসঙ্গে বিপুল পরিমাণ পণ্য ধ্বংস করায় বন্দরের ইয়ার্ডে কনটেইনারের চাপ কিছুটা হলেও কমে আসবে।
বন্দর-কাস্টম সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, বাজারে দাম কমে গেলে লোকসানের আশঙ্কায় অনেক সময় পণ্য খালাস নেন না আমদানিকারকরা। আবার যখন দাম বাড়ে, ততদিনে কনটেইনারে থাকা ফলমূলসহ নানা রকম ভোগ্যপণ্য নষ্ট হয়ে যায়।
আরও বড় লোকসানের আশঙ্কায় পচা পণ্য তারা শেষ পর্যন্ত না নিয়ে বন্দরেই ফেলে রাখেন। আইনি জটিলতায় আটকে গেলে বড় লোকসানের আশঙ্কায়ও অনেক সময় বন্দর থেকে পণ্য ছাড় করেন না আমদানিকারকরা।
এসব পণ্য শেষ পর্যন্ত নিলামে বিক্রি করা হয়। আর বিক্রি অযোগ্য পণ্য ধ্বংস করা হয়।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার সাইদুল ইসলাম জানান, জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ সুরক্ষা এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই আমাদের অগ্রাধিকার। তারই অংশ হিসেবে বিভিন্ন কারণে দীর্ঘদিন খালাস না নেওয়া ও নষ্ট হয়ে যাওয়া পণ্য ধ্বংস করা কাস্টমসের নিয়মিত কার্যক্রম।
এবার ধ্বংস কার্যক্রমে ৩৬টি কনটেইনার অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। প্রথম দিনে যতটুকু সম্ভব কনটেইনার ধ্বংস করা হবে। শুক্র ও শনিবার সীমিত কার্যক্রম চলবে। এরপর পুরোদমে ধ্বংস কার্যক্রম চলবে। এ কার্যক্রমে বন্দরে কন্টেনার জট ধীরে ধীরে নিরসন হচ্ছে বলে মনে করেন এ কর্মকর্তা।
এদিকে ধ্বংস কার্যক্রমের পর কোনো অনিয়ম বা চুরির ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকে সর্বাত্মক নজর রাখা হবে জানালেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক।
জেএন/পিআর