চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (সিইপিজেড) জেএমএস ও ম্যারিমো নামের দুটি পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
শনিবার (১১ জনুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন শ্রমিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে তাৎক্ষণিক আহতদের নামপরিচয় জানা যায়নি। এদিকে কারখানা দুটি বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আহতদের মধ্যে বেশির ভাগই জেএমএস কোম্পানির শ্রমিক। কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, গেল কয়েকদিন ধরে বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবিতে জেএমএসের শ্রমিকরা আন্দোলন করে আসছিলেন। দু’দিন বন্ধ থাকার পর বিষয়টির সুরাহা হলেও শনিবার ফের কারখানাটি চালু হয়।
অন্যদিকে সকালে মেরিনকোর শ্রমিকরা দাবি আদায়ে কারখানা থেকে বেরিয়ে আসেন। সে সময় তারা ঢিল ছুড়ে সংলগ্ন জেএমএস কারখানার কয়েকটি জানালার কাঁচ ভাঙলে দুই পক্ষই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
দুই কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে কয়েক ঘন্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং পাথর ছোড়াছুড়ি চলে। এতে অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে প্রায় ২০ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বর্তমানে তারা হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন শ্রমিকের সাথে কথা হলে তারা জানায়, বেতন ভাতা বৃদ্ধির জন্য দুই কারখানার শ্রমিকরা অনেকদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছিলেন।
এর মধ্যে জেএমএস কোম্পানি তাদের শ্রমিকদের দাবি মেনে নিলে শনিবার সকাল থেকে তারা কাজে যোগ দেয়। এ সময় ম্যারিমো কোম্পানির একদল শ্রমিক জেএমএস কারখানায় ঢুকে ভাঙচুরসহ কর্মরত শ্রমিকদের ওপর এলোপাতাড়ি হামলা চালায়।
এতে বহু শ্রমিক আহত হয়। ঘটনার পরপর আহতদের উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে আনা হয়েছে।
এদিকে সংঘর্ষে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও শিল্প পুলিশের একাধিক দল অবস্থান নেন। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
শিল্পপুলিশ চট্টগ্রামের বন্দর জোনের পরিদর্শক গোলাম নবী জানান, শ্রমিক অসন্তোষ নিয়ে দুই কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে মারামারি হয়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়। তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
ইপিজেড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আখতারুজ্জামান বলেন, মূল গেট খোলা নিয়ে এক কারখানার শ্রমিকের সাথে আরেক কারখানার শ্রমিকের কথাকাটাকাটি হয়। এরপরই তাদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষ চলে। এতে অনেকে আহত হয়েছেন। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
জেএন/পিআর