চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানার পূর্ব নাসিরাবাদ এলাকায় ১৩ বছর বয়সী এক শিশু ও উত্তর পতেঙ্গা এলাকায় পাঁচ বছর বয়সী এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর সাথে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে দায়েরকৃত পৃথক মামলার রায় দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক ফেরদৌস আরা পৃথক রায়ে মাদরাসার এক অধ্যক্ষসহ দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। একই সঙ্গে উভয়কে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত দুজন হলেন, উত্তর পতেঙ্গা এলাকার জামিয়াতুল মদিনা মাদরাসার অধ্যক্ষ, কিশোরগঞ্জ জেলার অষ্টগ্রাম থানার দেওঘর এলাকার বাসিন্দা মাকসুদুর রহমান (২৮) ও নোয়াখালীর চরজব্বর থানার পূর্ব চরভাটা এলাকার জোবায়ের হোসেন (২৭)।
ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) শফিউল মোরশেদ চৌধুরী রায়ের তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, যৌন নিপীড়নের অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত পৃথক রায়ে আসামি মাকসুদ ও জোবায়েরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।
একই সঙ্গে আদালত দুই আসামির প্রত্যেককে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
তিনি আরও জানান, রায়ের সময় আসামি মাকসুদ উপস্থিত ছিলেন না। তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানামূলে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। অন্যদিকে, আসামি জোবায়ের আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের উত্তর পতেঙ্গা এলাকার জামিয়াতুল মদিনা মাদরাসার অধ্যক্ষ মাকসুদ ৫ বছর বয়সী শিশুকে তার বড় ভাইয়ের সামনে থেকে ডেকে মাদরাসায় নিয়ে যান।
এরপর মাদরাসায় তার নিজ রুমে নিয়ে ওই শিশুকে যৌন নিপীড়ন করেন। এ ঘটনায় ভিকটিম শিশুর বাবা আসামি মাকসুদের বিরুদ্ধে পতেঙ্গা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
পুলিশ মামলার তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ২৭ জুন আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। ২০২২ সালের ২ মার্চ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
ছয়জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়ে আদালত এ রায় দেন। নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় মাদরাসার আরেক শিক্ষককে খালাস দিয়েছেন আদালত।
অন্যদিকে, ২০১৯ সালের ৬ জুলাই নগরের পাঁচলাইশ থানার পূর্ব নাসিরাবাদ এলাকায় ১৩ বছর বয়সী এক শিশুকে যৌন নিপীড়ন করেন আসামি জুবায়ের। ভিকটিম ও অপরাধী দুজনই ওই এলাকার একটি দোকানের কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন।
এ ঘটনায় ওই শিশুর মা বাদি হয়ে জুবায়েরের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মোট ৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়ে আদালত এ রায় দেন।
জেএন/পিআর