কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (কেজিডিসিএল) প্রাকৃতিক গ্যাসের অপচয় রোধ, সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত ও গ্যাসের ব্যবহার হ্রাস করার উদ্দেশ্যে নিজস্ব অর্থায়নে প্রি-পেইড স্মার্ট মিটার স্থাপন প্রকল্পটির শুরু করেন।
প্রকল্পের আওতায় নেওয়া চট্টগ্রামে এক লাখ প্রি-পেইড স্মার্ট মিটার স্থাপনের সিদ্ধান্তে কাজ শুরু হয়। কিন্তু প্রকল্পের বর্ধিত সময়েও কাজ শেষ করা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
প্রায় সাড়ে তিন বছর আগে প্রকল্পটি অনুমোদন পেলেও ধীরগতির কারণে এখন পর্যন্ত মাত্র ৬০ হাজার ৫০০ মিটার বিতরণ করা হয়েছে। বাকি আরও ৩৯ হাজার ৫০০ টি মিটার স্থাপনের জন্য প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বাড়ানো হয়েছে।
কেজিডিসিএলের মোট গ্রাহক সংযোগ ৬ লাখ ১ হাজার ৯১৪টি। এরমধ্যে গৃহস্থালি সংযোগ ৫ লাখ ৯৭ হাজার ৫৬১টি। চট্টগ্রামে গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৩২ কোটি ঘনফুট। ১ লাখ প্রিপেইড মিটার বসালে মাসে ১৫ লাখ ঘনমিটার গ্যাস সাশ্রয় হবে। এতে আর্থিক সাশ্রয় মাসে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
কেজিডিসিএল সংশ্লিষ্টদের মতে, গ্রাহকদের বিনামূল্যে মিটার দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু মিটার বসাতে গ্রাহকদের অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে। রাইজার থেকে রান্নাঘর পর্যন্ত পাইপলাইন বসাতে প্রতিটি চুলার জন্য ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা খরচ করতে হয়। এছাড়াও অনেক গ্রাহক মনে করেন মিটার বসালে তারা ইচ্ছামতো গ্যাস ব্যবহার করতে পারবেন না।
২০২২ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে প্রিপেইড মিটার বসানোর আবেদন গ্রহণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত ১ লাখ ২০ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। মিটার বসানোর কার্যক্রম শুরু হয় ২০২৪ সালের ১৬ জানুয়ারি।
চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ৬০ হাজার ৫০০টি মিটার বসানো হয়েছে। বাকি গ্রাহকেরা আবেদন করেও মিটার নিচ্ছেন না। মিটার নিতে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি ও গ্রাহকদের খুদে বার্তা পাঠিয়েও সাড়া মিলছে না।
জানা যায়, কেজিডিসিএলের মোট গ্রাহক সংযোগ রয়েছে ৬ লাখ ১ হাজার ৯১৪টি। এর মধ্যে গৃহস্থালি সংযোগ আছে ৫ লাখ ৯৭ হাজার ৫৬১টি, বাকিগুলো শিল্প-বাণিজ্যসহ অন্য খাতে।
চট্টগ্রামে গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৩২ কোটি ঘনফুট। ১ লাখ প্রিপেইড মিটার বসালে মাসে ১৫ লাখ ঘনমিটার গ্যাস সাশ্রয় হবে। এতে আর্থিক সাশ্রয় মাসে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা। তা বাস্তবায়নে ২৪১ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত।
পরামর্শক ও ঠিকাদার নিয়োগ দিতেই দুই বছরের বেশি সময় লাগে। ২০২৪ সালের ১৬ জানুয়ারি মিটার স্থাপন শুরু হয়। এরপর দুই বছর মেয়াদ বাড়িয়ে তা ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়। এতে ব্যয় বাড়ে ৫০ কোটি টাকা।
এর আগে, ২০১৫ সালে জাইকার অর্থায়নে ২৪৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬০ হাজার সংযোগে প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করা হয়।
কেজিডিসিএলের উপ-মহাব্যবস্থাপক ও প্রকল্প পরিচালক মো. নাহিদ আলম বলেন, আমাদের কাছে মিটার আছে এবং মিটার বসানোর সক্ষমতাও রয়েছে। কিন্তু গ্রাহকরা মিটার বসাচ্ছেন না। বর্তমানে গ্যাস সংযোগ কোনো কারণে বন্ধ হলেই আর স্মার্ট মিটার বসানো ছাড়া চালু করা হচ্ছে না। ভবিষ্যতে বাধ্যতামূলক করার বিষয়েও সিদ্ধান্ত আসছে।
উল্লেখ্য, আবাসিক গ্রাহকদের জন্য প্রিপেইড মিটার স্থাপন প্রকল্প’ শিরোনামে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক লাখ মিটার স্থাপনের জন্য প্রকল্পটি হাতে নেয় কেজিডিসিএল।
প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য প্রাকৃতিক গ্যাসের অপচয় রোধ, ব্যবহার নিশ্চিত করা। এই প্রিপেইড মিটারগুলো কন্ট্যাক্টলেস স্মার্ট কার্ডভিত্তিক উন্নত প্রযুক্তির। ব্যবহার অনুযায়ী মূল্য প্রদান করতে হবে।
নির্দিষ্ট মাত্রার ভূমিকম্প হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাবে। মিটারে রিচার্জকৃত ক্রেডিট শেষ হয়ে গেলেও তাৎক্ষণিকভাবে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হবে না। স্বয়ংক্রিয়ভাবে জরুরি ব্যালেন্স দেওয়া হবে।
জেএন/ভুপেন/পিআর