চট্টগ্রাম কাস্টমসের ই-অকশনে (অনলাইন নিলাম) তোলা হচ্ছে বেশ কয়েকটি আইটেমের ফেব্রিক্সসহ ৮৩ লট পণ্য।
অনলাইনে দরপত্র জমা নেওয়া শুরু হয়েছে গত সোমবার সকাল ৯টা থেকে। দরপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময় নির্ধারণ করা হয় আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৫টা পর্যন্ত।
তাছাড়া সরাসরি পণ্য দেখার জন্য আগ্রহী বিডাররা (নিলামে অংশগ্রহণকারী) সুযোগ পাচ্ছে আগামীকাল বৃহস্পতিবার পর্যন্ত।
কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, আমদানিকৃত পণ্য জাহাজ থেকে বন্দর ইয়ার্ডে নামার ৩০ দিনের মধ্যে সরবরাহ নিতে হয়। এই সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য সরবরাহ না নিলে তাকে নোটিশ দেয় কাস্টম কর্তৃপক্ষ।
নোটিশ দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে এই পণ্য সরবরাহ না নিলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টম কর্তৃপক্ষ। এছাড়া মিথ্যা ঘোষণায় জব্দ পণ্যও নিলামে তোলা যায়।
সর্বশেষ ফেব্রিক্স–টাইলসহ ৮৩ লট পণ্য অনলাইন নিলামে (ই–অকশন) তুলছে চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম শাখা। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ফেব্রিক্স, পিকচার অ্যালবাম ক্যাটালগ, সেকেন্ড হ্যান্ড শাটল লুমস, ইউজড ক্রলার এঙকেভেটর, পার্টস অব ফ্যান ব্লেড, পেপার, অ্যালুমিনাস সিমেন্ট, সিলিকন জেল, ক্যালসিয়াম কার্বোনেট, ব্যাটারি, হ্যান্ড ব্যাগ, ক্রাফট কার্টন, লেডিস সু সোল, এন্টি মোল্ড ফিনিশিং এজেন্ট, প্লাস্টিক টয়, ক্যাট কেইজ, সিরামিক টাইলস, উডেন পেলেটস, সার্জিক্যাল গ্লাভস, প্লাস্টিক ট্যাগ, সিরামিক মেইড ফ্লাওয়ার ভেস এবং পিভিসি রেসিন।
চট্টগ্রাম কাস্টমসের নিলাম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান কেএম কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মোরশেদ জানান, চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ৮৩ লট পণ্য তোলা হচ্ছে। একইসাথে বর্তমানে বিভিন্ন নিলাম অযোগ্য পণ্য ধ্বংসের কার্যক্রমও চলমান রয়েছে।
চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের উপ–কমিশনার সাইদুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন ধরে খালাস না নেওয়া এবং মামলা জনিত কারণে বন্দরে পড়ে থাকা পণ্য রুটিন অনুযায়ী নিলামে তুলতে হয়। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা এবার ৮৩ লট পণ্য অনলাইন নিলামে তোলা হচ্ছে। তাছাড়া নিলাম অযোগ্য পণ্য ধ্বংস করে বন্দরের ইয়ার্ড খালি করছি। এই কাজ চলমান থাকবে।
জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৭ ও ২৮ অক্টোবর ১৬ লট বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিলামে তোলার মাধ্যমে ই–অকশনের যাত্রা শুরু হয়। এরপর ২০২১ সালের ১৯ ও ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় ২০ লট পেঁয়াজ নিলামে তোলা হয়।
এছাড়া একই বছরের ৩ ও ৪ নভেম্বর কার্নেট ডি প্যাসেজ বা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা বিলাসবহুল ১১২ লট গাড়ি তোলা হয়।
দ্বিতীয় দফায় ১২ ও ১৩ জুন কার্নেট ডি প্যাসেজ (শুল্কমুক্ত পর্যটক সুবিধায়) সুবিধায় আসা ১০৮টি গাড়ি পুনরায় নিলামে তোলে কাস্টম কর্তৃপক্ষ।
২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ৭৮ লট কার্নেট গাড়ি নিলামে তোলা হয়। এছাড়া ২০২৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন ধরনের ২৩ লট পণ্য এবং গত ৩১ ডিসেম্বর ১০৮ লট পণ্য ই–অকশনে তোলা হয়।
২০২৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি বিভিন্ন ধরনের ৭৯ লট পণ্য নিলামে তোলা হয়। ১৬ মে নিলামে তোলা হয় ৯০ লট পণ্য। ২৬ জুন নিলামে তোলা হয় ৬২ লট পণ্য। ১১ সেপ্টেম্বর তোলা হয় ৬ লট পণ্য। ১৮ সেপ্টেম্বর তোলা হয় ৪৬ লট পণ্য, ৫ নভেম্বর তোলা হয়েছে ৪৫ লট পণ্য, ১২ ডিসেম্বর তোলা হয় ৪৯ লট পণ্য এবং সর্বশেষ চলতি মাসের ১২ জানুয়ারি তোলা হয়েছে ৪৭ লট পণ্য।
চট্টগ্রাম কাস্টমের বিডাররা (দরপত্র আহ্বানকারী) বলছেন, অনুমোদনে সময়ক্ষেপণের কারণে ই–অকশন নিয়ে এলেও বিডারদের তেমন কোনো আগ্রহ নেই। যার ফলে সাধারণ বিডাররা ই–অকশন থেকে বারবার মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
ই–অকশন মানে হচ্ছে দ্রুত নিলাম। তবে তা ম্যানুয়াল নিলামের মতো মাসের পর মাসের সময়ক্ষেপণ হচ্ছে অভিযোগ করে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতেও নিলাম আয়োজন করলে বিডাররা উপকৃত হবেন বলছে বিডাররা।
জেএন/পিআর