আজ বিশ্ব ক্যান্সার দিবস

চট্টগ্রামে ক্যান্সার আক্রান্তের ৬০ শতাংশই নারী

অনলাইন ডেস্ক

স্তন, জরায়ুমুখ, ফুসফুস, মুখগহ্বর ও গলা– এই চার ক্যান্সার রোগে সবচেয়ে বেশি ‘কাবু’ হচ্ছেন চট্টগ্রামের বাসিন্দারা। আক্রান্তের ৬০ শতাংশই নারী। নারীরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আর পুরুষরা আক্রান্ত হচ্ছেন ফুসফুস ক্যান্সারে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগের গত এক বছরের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। তবে ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়লেও মানুষের মাঝে সচেতনতা না বাড়ার কথা বলছেন চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টরা।

- Advertisement -

পর্যালোচনায় দেখা যায়, চমেক হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগে গত এক বছরে ৩ হাজার ১০৮ রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশই স্তন, জরায়ুমুখ, ফুসফুস, মুখগহ্বর ও গলা ক্যান্সারের রোগী। তাদের মধ্যে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৮২০ জন নারী এবং ১ হাজার ২৮৮ জন পুরুষ। এ সময়ে বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর সংখ্যা ৫ হাজার ৬৫৮। চমেক হাসপাতালে ক্যান্সার শনাক্তে নেই প্যাট-সিটি স্ক্যানের ব্যবস্থা। রোগ শনাক্তে নেই মলিকুলার ল্যাবও। অথচ চিকিৎসকরা বলছেন, মলিকুলার ল্যাবের মাধ্যমে যে ফল পাওয়া যায়, তার ভিত্তিতেই নির্দিষ্ট থেরাপি দিতে হয় রোগীকে। ভরসার এই বিভাগের অবস্থাও খুব নাজুক। এখানে পুরুষ ও নারীদের জন্য শয্যা রয়েছে ১৫টি করে মাত্র ৩০টি। ডে কেয়ার বেড আছে মাত্র ৯টি। সংকট রয়েছে চিকিৎসক-নার্সের।

- Advertisement -google news follower

রোগী বাড়ছে চট্টগ্রাম মা ও শিশু ক্যান্সার হাসপাতালেও। এক বছরে সেখানে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৫ হাজার রোগী। নারীদের স্তন ও জরায়ুমুখ এবং পুরুষদের ফুসফুস ক্যান্সারের রোগী বেশি।

চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ‘জরায়ুমুখ ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব ও নমুনা পরীক্ষা সংক্রান্ত’ শীর্ষক পরিচালিত এক গবেষণার তথ্যমতে, দেশে জরায়ুমুখের ক্যান্সার নারীদের দ্বিতীয় প্রধানতম ক্যান্সার। এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে প্রতিবছর দেশে সাড়ে ৬ হাজারের বেশি নারীর মৃত্যু হয়। রোগটিতে প্রতিবছর নতুন করে আক্রান্ত হয় প্রায় ১২ হাজার।

- Advertisement -islamibank

চমেক হাসপাতালের রেডিওথেরাপি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আলী আজগর চৌধুরী বলেন, আক্রান্তের হার বাড়লেও সেই তুলনায় মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়ছে না। মনে রাখতে হবে, ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবচেয়ে বড় অস্ত্র সচেতনতা এবং সমন্বিত প্রচেষ্টা।

মেডিকেল কলেজটির গাইনি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. ফারজানা চৌধুরী বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় করতে পারলে জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্তের প্রায় ৯০ শতাংশকে সুস্থ করা সম্ভব। স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে স্তন ক্যান্সার প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করেও মৃত্যুহার কমানো যায়।

ক্যান্সার বিশেষজ্ঞদের মতে, আগে নারীদের জরায়ু ক্যান্সারের হার বেশি থাকলেও এখন স্তন ক্যান্সারে আক্রান্তের হার বাড়ছে। বিলম্বে বিয়ে, দীর্ঘ বিরতি দিয়ে সন্তান নেওয়া এবং শিশুকে বুকের দুধ না খাওয়ানো স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার বড় কারণ। ধূমপান, জর্দা, অ্যালকোহল, তামাকজাতীয় দ্রব্য সেবন ক্যান্সারের সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করে। পরিবেশগত দিক ও দূষিত বাতাস ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।

আজ সোমবার বিশ্ব ক্যান্সার দিবস। দিবসটি উপলক্ষে দিনভর চমেক হাসপাতালসহ চট্টগ্রামে সেমিনার, আলোচনা সভা ও শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছে।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM