শহীদ জিয়ার ১৯ দফা বাস্তবায়নের সৈনিকের শেখড় থেকে উঠে আসা এবং ৯০ তে স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে বুলেট বোমা উপেক্ষা করে রাজপথে লড়ে যাওয়া চট্টগ্রামের এক বিএনপি নেতার নাম আকতার খান।
যার মনে প্রাণে বিদ্যমান শহীদ জিয়ার আদর্শের রাজনীতি। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৩৩ নং ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ডের বাসিন্দা এই নেতা এক-এগারো ও দীর্ঘ ১৬ বছর স্বৈরাচারী হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথ থেকে সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে লড়ে গেছেন।
দলীয় প্রচার প্রচারণা ও দল গঠনে ভুমিকা রাখতে গিয়ে বিভিন্ন সময় দোসরদের রোষানলের শিকার হয়ে ৩৬ টা মামলাতে বিনা অপরাধে হয়রানির শিকার হয়ে জেলও খেটেছেন রাজপথের এ লড়াকু নেতা। ষড়যন্ত্র মূলক মামলায় তাকে কারাগারে আটকে রেখে নানা ভাবে হয়রানী করেছে স্বৈরাচারী সরকার।
দলের দুর্দিনে দলের ও নেতাকর্মীদের জন্য নিজের সবটুকু ঢেলে যিনি রাজনীতির মাঠ গরম করে রেখেছিলেন সেই বিপ্লবী নেতা আকতার খানকে দলের সুদিনে কি মূল্যায়ন করা হবে, এমন প্রশ্নই এখন আলোচনার অংশ কোতোয়ালী থানা এলাকায়।
শক্তিশালী দল গঠনের লক্ষ্যে নতুন কমিটিতে মূল্যায়ন করা হবে এমন প্রত্যাশায় করেন ওই এলাকার তৃনমূল নেতাকর্মীরা। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৩৩ নং ফিরিঙ্গি বাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবেও দেখতে চান অনেকে।
বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী দাবি করেন, আমরা চাই কোন হাইব্রিড নেতা দলে প্রবেশ না করুক। দলের দুঃসময়ে রাজপথে থেকে নেতাকর্মীদের যিনি মনোবল চাঙ্গা রেখেছেন, সাহস যুগিয়েছেন এমন নেতাকেই যেন দল মূল্যায়ন করেন।
তেমনই এক নেতা আকতার খান। যিনি নিজের ব্যবসা থেকে শুরু করে পরিবার পরিজনসহ অনেক কিছুই ত্যাগ করে দলের দুঃসময়ে রাজপথে থেকে নেতা কর্মীদের নেতৃত্ব দিয়েছেন।
শুধুমাত্র বিএনপি রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার কারণে স্বৈরাচারের দোসররা বিভিন্ন ভাবে তাদের ক্ষমতাবলে ৩৩ নং ফিরিঙ্গি বাজার ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি আকতার খানের ব্যবসা ও তার পরিবারের সদস্যদের পড়ালেখা থেকে শুরু করে চাকরির ব্যাপারেও বেশ ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন।
কয়েকজন স্থানীয় নেতাকর্মীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, ২০১৮ সালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ৩৩ নং ফিরিঙ্গি বাজার ওয়ার্ডে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে কাউন্সিলর পদপ্রার্থী হিসেবে আকতার খানকে মনোনয়ন দিলেও স্বৈরাচারীদের দোসরদের নানান ষড়যন্ত্র এবং দলের প্রয়োজনে তিনি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করে সাধারন সম্পাদককে দিয়ে নির্বাচন করান আকতার খান।
ওই নির্বাচনে তিনি দলীয় প্রার্থীর জন্য প্রাণপণ লড়ে গেলেও স্বৈরাচারীদের চুরির কাছে সব অম্লান হয়ে যায়।
দুঃসময় কেটে গেছে। এখন সুবাতাস বইছে। এখনও ন্যায়ের সাথে ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন এবং দলীয় প্রয়োজনে নিজের সব টুকু দিয়ে কাজ করার চেষ্টা ও কুচক্রীমহলের সকল ষড়যন্ত্র রুখে দিতে মাঠ পর্যায়ে লড়ে যাচ্ছেন আকতার খান।
সারাদেশে নতুন করে দল যখন সুসংগঠিত হচ্ছে ঠিক এ সময়ে নিজ এলাকায় করণীয় ও দলের কাছে প্রত্যাশা কি জানতে চাইলে বিএনপি নেতা আকতার খান জানান, আমার প্রথম রাজনীতি শহীদ জিয়ার আদর্শের রাজনীতি। শুরু থেকেই এ আদর্শ ধারণ করে আছি, এখনো আছি ভবিষ্যতে ও যেনো এভাবেই থাকতে পারি এটাই মহান রবের কাছে দোয়া।
আমি রাজনৈতিক কর্মকান্ডে বিভিন্ন সময়ে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দলের হয়ে দায়িত্ব পালন করেছি। এরমধ্যে ১৯৯১ সালে ওয়ার্ড যুবদল, ৯২ সালে নগর যুবদল, ৯৪ সালে ওয়ার্ড বিএনপি ও ৯৬ সালে নগর বিএনপির নির্বাহী সদস্য হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছি। তাছাড়া বিএনপির রাজনৈতিক আদর্শকে সর্বমহলে পৌছে দেওয়ার লক্ষ্যে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনেও নিজেকে নিযুক্ত রেখে সমাজ গঠনে শ্রেষ্ঠ ভূমিকা পালনের চেষ্টা করে যাচ্ছি।
ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে জানতে পেরেছি সারাদেশে ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করে দলকে নতুন করে সুসংগঠিত করা হচ্ছে। চট্টগ্রামেও নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন প্রক্রিয়াধীন। সুতারাং এ প্রেক্ষাপটে নতুন কমিটি যখন হচ্ছে আমার কাজের মূল্যয়ন করার জন্য সকল জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দের কাছে আকুল আবেদন থাকবে।
উল্লেখ্য : আকতার খান ১৯৯১ সালে ৩৩ নং ফিরিঙ্গী বাজার ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৯২ সালে নগর যুবদলের প্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯৪ সালে ৩৩ নং ফিরিঙ্গী বাজার ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ১৯৯৬ সালে ৩৩ নং ফিরিঙ্গি বাজার ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির নির্বাহী সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
তাছাড়া ২০০১ সালে চারদলীয় ঐক্য জোট এর সদস্য মনোনীত হয় এবং আন্দোলন সংগ্রামে রাজপথে সাহসী ভূমিকার জন্য ২০০৬ সালে তৃতীয় বারের মতো ৩৩ নং ফিরিঙ্গি বাজার ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছিলেন। সে সাথে কোতোয়ালি থানা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক এবং পরবর্তীতে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এর দায়িত্বও তিনি পালন করেছিলেন। বর্তমানে তিনি সততা ও নিষ্ঠার সাথে ৩৩ নং ফিরিঙ্গি বাজার ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
এছাড়াও শোষণমুক্ত সমাজ গড়ার লক্ষ্যে ১৯৮৫ সালে ফিরিঙ্গি বাজার অঙ্গীকার সংগঠন নামে একটি সামাজিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন আকতার খান। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এখনো ওই সংগঠনের পক্ষ থেকে ঈদ জামাতের আয়োজনসহ নানা সামাজিক কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন আকতার খান।
পরে মানব কল্যাণ সংস্থা নামে আরও একটি সংগঠন তিনি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে সে সংগঠনটির উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়াও নগর ২২ মহল্লা কমিটিতে সদস্য হিসেবে,মাস্টার সোসাইটি ও ফিরিঙ্গি বাজার শান্তি সংঘ ক্লাবে উপদেষ্টা হিসেবে, ওয়ার্ড আঞ্জুমানে মোত্তাবিনে গাউসে মাইজভান্ডারি (শাহ এমদাদিয়া) কমিটির সাথেও যুক্ত রয়েছেন আকতার খান।
পেশাজীবি সংগঠন হিসেবে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতি, চট্টগ্রাম জেলা শাখার সহ সভাপতি, সেন্ট্রাল প্লাজা ব্যবসায়ী সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কতৃপক্ষ ঠিকাদার সমিতির সভাপতি, ফিরিঙ্গি বাজার শ্রমিক ঐক্য পরিষদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক এবং বিপনি বিতান মার্চেন্ট ওয়েল্ফার কমিটির আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আকতার খান।
জেএন/পিআর