চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেশিয়াম মাঠে আয়োজিত অমর একুশে বইমেলার ১৭তম দিনে ‘প্রকাশনা শিল্পের বিকাশে লেখক-প্রকাশক ও পাঠকের দায়বদ্ধতা’ শীর্ষক আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দৈনিক আজাদীর সম্পাদক ও প্রকাশক, একুশে পদকপ্রাপ্ত এম এ মালেক বলেছেন, “আমাদের উচিত যুবসমাজকে বইমুখী করা। তাদের বিদ্যাচর্চা ও জ্ঞান অন্বেষণের দিকে মনোযোগী করতে বিভিন্ন কর্মসূচি আয়োজন করা প্রয়োজন।”
তিনি বলেন, “বিগত সরকারের সময়ে ভারত থেকে বই আমদানি করা হতো, অথচ আমাদের দেশে ছাপার মান এত উন্নত যে, স্থানীয় মুদ্রণ শিল্প দিয়েই চাহিদার চার ভাগের এক ভাগ মেটানো সম্ভব ছিল। আমাদের ছাপাখানাগুলো পশ্চিমবঙ্গের তুলনায় উন্নত, কারণ এখানকার ৯০ শতাংশ মেশিনারিজ জার্মানি থেকে আনা হয়েছে। অথচ আমরা অর্থনৈতিক স্বার্থে অন্য দেশের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছিলাম।”
এম এ মালেক আরও বলেন, “রবীন্দ্রনাথ নেই, বড় বড় লেখকরাও চলে গেছেন। কিন্তু আমরা তাদের লেখা পড়তে পারছি ছাপাখানার বদৌলতে। লেখক-প্রকাশকদের কারণে শত বছরের পুরনো বই আজও আমরা পড়তে পারি।”
বইয়ের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “একটি ভালো বই বন্ধুর সমান, আর একজন ভালো মানুষ পুরো লাইব্রেরির সমান। বইমেলা মানুষকে আনন্দমুখী করে, বই কেনার আগ্রহ বাড়ায়। বাঙালি জাতিগতভাবে আরামপ্রিয় হলেও বইমেলার মাধ্যমে তারা দুর্লভ বই সহজেই সংগ্রহ করতে পারে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সভাপতি শাহাবুদ্দিন হাসান বাবু। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কবি জিন্নাহ চৌধুরী এবং সমাজচিন্তক জাহিদুল ইসলাম।
বইমেলায় লেখক, পাঠক, সংস্কৃতিকর্মীসহ নানা বয়সী মানুষের ঢল নেমেছে। বিকেলের পর থেকে স্টলগুলোর সামনে দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের সহযোগিতায় গত ১ ফেব্রুয়ারি এ বইমেলার উদ্বোধন হয়।
এক লাখ বর্গফুটজুড়ে বিস্তৃত এই বইমেলা চট্টগ্রামের সংস্কৃতিপ্রেমীদের জন্য এক মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। আয়োজকরা আশা করছেন, পরবর্তী দিনগুলোতে দর্শনার্থীদের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে।
জেএন/এমআর