চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলারর ছনখোলা এলাকায় ডাকাত সন্দেহে গণপিটুনিতে দুইজন নিহত হয়েছে। ডাকাত সন্দেহে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে তাদের পিটুনি দেওয়া হয়। এর আগে ওই দুইজনের গুলিতে স্থানীয় পাঁচ বাসিন্দা আহত হন।
গুলিবিদ্ধ স্থানীয় পাঁচ বাসিন্দা হলেন- ইকবাল, ওবায়দুল হক, আব্বাস উদ্দিন, মামুনুর রশিদ ও নাসির উদ্দিন। তাদের মধ্যে ইকবাল ও ওবায়দুল হকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। আহতদের প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
সোমবার (৩ মার্চ) দিবাগত রাত পৌনে ১১টার দিকে উপজেলার কাঞ্চনা ছনখোলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, কাঞ্চনার নেজাম নামের এক রাজনৈতিক কর্মী গত ৫ আগস্টের পর মধ্যপ্রাচ্য থেকে দেশে ফেরেন। ফিরেই তিনি এলাকায় চাঁদাবাজি, ডাকাতি শুরু করেন। নেজাম গ্রুপের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠে।বিশেষ করে মধ্যম সাতকানিয়া এলাকা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নেয় নেজাম, আবু ছালেক, আবু আবু তাহের আদাইয়া, জাহেদ ও রিফাতরা।
সোমবার নেজাম আরো কয়েকজন নিয়ে ছনখোলা এলাকায় গেলে তারাবি নামাজ পরে বের হওয়া মুসল্লিরা নেজাম গ্রুপকে ঘিরে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয় এলাকায় ডাকাত পড়েছে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নেজাম একালাবাসীর ওপর গুলি চালায়। এতে কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হলে ক্ষিপ্ত এলাকাবাসী নেজাম ও তাঁর সাথে থাকাদের গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলে নেজাম ও ছালেক নামে দুজন মারা যায়।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, নিহতদের কাছে বিদেশি অস্ত্র পাওয়া গেছে, যেটি থানা থেকে লুট করা বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয় এক যুবক জানান, এলাকায় মাটি কাটা ও চাঁদাবাজিসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিল নেজামরা। এ ছাড়া বিচারের নাম করে লোকজনকে অপহরণ করার অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে সম্প্রতি চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শকের কাছে একটি অভিযোগ জমা পড়েছে।
সাতানিয়া থানার অফিসার আমজাদ হোসেন জানান, এলাকাবাসীর গণপিটুনিতে দুজন মারা গেছে। কয়েকজন গুলিবিদ্ধ আছে। তবে কী কারণে এই ঘটনা ঘটেছে সেটা তিনি জানাতে পারেননি। ঘটনাস্থলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও অন্যান্য অফিসার আছে জানিয়ে তিনি বলেন, গুলিবিদ্ধদের চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, নিহত দুজনের মরদেহ থানায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। গুলিবিদ্ধ অন্তত ৫ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।
চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল ইসলাম সানতু বলেন, দুজনের মরদেহ আমরা পেয়েছি। কী কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তদন্ত করা হচ্ছে।
জেএন/এমআর