চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ডাকাত সন্দেহে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে গণপিটুনিতে দুজনের মৃত্যু ও কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। সোমবার রাতে সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হলেন-উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের মধ্যম কাঞ্চনা এলাকার মাহমুদুল হকের ছেলে মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন (৪৫) ও একই ইউনিয়নের গুরগুরি এলাকার আবদুর রহমানের ছেলে মোহাম্মদ ছালেক (৩৫)।
গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন স্থানীয় তিন বাসিন্দা ও এক দোকানি। আহত ব্যক্তিরা হলেন ওবায়দুল হক (২২), নাসির উদ্দিন (৩৮), আব্বাস উদ্দিন (৩৮) ও মো. মামুনুর রশিদ (৪৫।
স্থানীয়রা জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নেজাম উদ্দিন এলাকায় আসতেন না। গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি এলাকায় ফেরেন।
সোমবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে ৪ থেকে ৫টি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় নেজামসহ একদল যুবক ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় যান।
সেখানে তাদের দেখে মসজিদের মাইকে এলাকায় ডাকাত পড়েছে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। ঘোষণা শুনে এলাকাবাসী তাদের আটকের উদ্দেশ্যে জড়ো হন। যদিও এলাকাবাসীর দাবি তাদের দিকে গুলি ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে একপর্যায়ে গণপিটুনিতে নেজাম ও ছালেক নিহত হন।
নিহত দুজনই জামায়াতে ইসলামীর সক্রিয় কর্মী উল্লেখ করে জামায়াতে ইসলামীর সাতকানিয়া উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের সেক্রেটারি জায়েদ হোসেন দাবি করেছেন সালিস বৈঠকের কথা বলে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে তাদের হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত দুজনের মাথায় পর্যায়ক্রমে আঘাত করা হয়।
তবে দলটির উপজেলা আমির মাওলানা কামাল উদ্দিন বলেন, নিহত ব্যক্তিরা জামায়াতের তালিকাভুক্ত কোনো কর্মী নন। তারা জামায়াতকে ভালোবাসতেন। এ ঘটনা কি পরিকল্পিত নাকি এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ঘটেছে, তা প্রশাসনকে খুঁজে বের করার আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে সাতকানিয়া থানার ওসি মো. জাহেদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, আটটি গুলির খোসা ও একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা জব্দ করেছে পুলিশ।
নিহত ব্যক্তিদের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোমবার রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। আহত ব্যক্তিরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, নিহত যুবকেরা রাতে কেন ওই এলাকায় গিয়েছিলেন এবং তাদের গণপিটুনি দিয়ে কেন হত্যা করা হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। তবে পুরো বিষয়টি জানার জন্য তদন্ত চলছে।
জেএন/পিআর
