পবিত্র রমজান মাসে চট্টগ্রামের টেরিবাজারের অন্যতম পোশাক বিক্রয় প্রতিষ্ঠান মেগামার্টের মেগা চুরির ঘটনা প্রকাশ্যে আনলো ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
বুধবার (১৯ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর বৃহৎ পোশাকের বাজার টেরিবাজারে অভিযান চালায় অধিফতরের একটি টিম।
অভিযানে স্বনামধন্য পোশাক বিক্রয় প্রতিষ্ঠান মেগামার্টে পণ্য বিক্রয়ে ক্রেতাদের সাথে অভিনব প্রতারণার বিষয়টি সামনে আসে। প্রতিষ্ঠানটি দেশি পোশাক বিদেশি বলে ক্রেতাদের কাছেেবেশি দামে বিক্রি করে প্রতারণা করেছে। ফলে মেগামার্টকে এক লাখ টাকা জরিমানা করে অধিদপ্তর।
ভোক্তা অধিদফতর সংরক্ষণ অধিদফতর, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক ফয়েজ উল্লাহর নেতৃত্বে অভিযানটি পরিচালিত হয়।
অভিযানে দেখা যায়, নিজস্ব কিছু পণ্যের পাশাপাশি দেশিয় তৈরি কিছু পোশাক বিদেশি বলে বেশি দামে বিক্রি করছে মেগামার্ট।
দোকানটির বিক্রয়কর্মীরাও জানান, এগুলো ভারতীয় ও পাকিস্তানি কাপড়। তবে ডকুমেন্ট চাইলে প্রতিষ্ঠানটি তা দিতে পারেনি। একপর্যায়ে তারা স্বীকার করে যে সেগুলো দেশে তৈরি পণ্য।
এ বিষয়ে অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ফয়েজ উল্লাহ বলেন, ‘পণ্যগুলো যে বিদেশ থেকে আনা হয়েছে সেগুলোর কোনো ডকুমেন্ট তাদের কাছে নেই। এরপর তারা স্বীকার করে যে সেগুলো দেশে তৈরি পণ্য। আমাদের সঙ্গে তারা যেহেতু এটা করছে, তাহলে ক্রেতাদের সঙ্গে আরও বেশি করবে।
তিনি বলেন, ‘তাদেরকে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি যাতে কাপড়ের ওপর মেইড ইন বাংলাদেশ লেখা থাকে। তাদের কাছে অনুমোদিত নয় এমন কিছু কসমেটিকস পেয়েছি। আর কিছু বিদেশি কসমেটিকস পেয়েছি। যেগুলো তারা অনেক দামে বিক্রি করছেন।
কিন্তু কসমেটিকসের গায়ে আমদানিকারকের নাম নেই। আমাদের মনে হচ্ছে কসমেটিকগুলো ভুয়া ও ভেজাল। ফলে প্রতিষ্ঠানটিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করে সতর্ক করেছি, যাতে এসব পণ্য বিক্রি না করে।
তাছাড়া একই দিনে নগরীর কোতোয়ালী থানা মোড় এলাকায় পৃথক অভিযান পরিচালনা করে আরও দুটি খাদ্য বিপনন প্রতিষ্ঠানকে ১৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এর মধ্যে কোতোয়ালি মোড় সংলগ্ন ‘মধুবন’ এর একটি আউটলেটে মেয়াদ উত্তীর্ণ দই এবং কেক এর স্টিকার উঠিয়ে ফেলে বিক্রি করার উদ্দেশ্য সংরক্ষণ, অপরিচ্ছন্ন ও ইঁদুরের গন্ধযুক্ত পরিবেশ, নিষিদ্ধ অ্যালকোহলিক পানীয় বিক্রয় এর উদ্দেশ্য সংরক্ষণ, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যের স্টিকার পরিবর্তনের উদ্দেশ্যে স্টিকার সংরক্ষণ, হালিমের মেয়াদ না থাকা এবং অননুমোদিত বিদেশি পণ্য বিক্রয় করায় উক্ত প্রতিষ্ঠানে দশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
একই এলাকায় অবস্থিত ‘মালঞ্চ’ রেস্টুরেন্টে দেখা যায়, জিলাপি তৈরির মিষ্টির সিরায় একাধিক মাছি মরে থাকা, ক্ষতিকর ইন্ডাস্ট্রিয়াল রং খাবারে ব্যবহার করা এবং বাসি ইফতার বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ করায় প্রতিষ্ঠানটিকে ৭ হাজার টাকা অর্থদণ্ড করা হয়।
টেরিবাজার ও কোতোয়ালী মোড় এলাকায় পৃথক অভিযান পরিচালনাকালে ভোক্তা অধিদপ্তর সংরক্ষণ অধিদফতর, চট্টগ্রামের সহকারি পরিচালক আনিসুর রহমান, সহকারী পরিচালক মাহমুদা আক্তার, ক্যামেরাম্যান মো: আফতাবুজ্জামান এবং টেরিবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবদুল মান্নান উপস্থিত ছিলেন।
জেএন/পিআর