দিনাজপুরে ১৩০টি আসনের ট্রেনের অবৈধ টিকিটসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক সদস্যকে আটক করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) সকাল ১০টায় ঠাকুরগাঁও রেলস্টেশন থেকে নৌ-বাহিনীর ওই সদস্যকে আটক করেছে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। পরে সন্ধ্যায় তাকে দিনাজপুর জিআরপি থানায় আনা হয়েছে।
আটক নৌ-বাহিনীর সদস্য সাজেদুর রহমান (২৮) ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার রাধানাথপুর গ্রামের বিকল মন্ডলের ছেলে ও বাহিনীতে কর্মরত আছেন। বর্তমানে খুলনায় বিএনএস পদ্মা ইউনিটে ল্যান্স কর্পোরাল পদে কর্মরত তিনি। আটককালে তার কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন, এর মধ্যে দুটি স্মার্ট ও একটি বাটন ফোন এবং বিভিন্ন কোম্পানির ১৪টি সিম কার্ড এবং ট্রেনের টিকিট জব্দ করা হয়েছে।
রেলওয়ে পুলিশ সূত্র জানায়, বুধবার রাতে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা দ্রুতযান এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী ছিলেন সাজেদুর রহমান। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ট্রেনটি ঠাকুরগাঁও স্টেশনে পৌঁছালে প্ল্যাটফর্মে টিকিট চেকিং করাকালে সাজেদুরের কাছে টিকিট দেখতে চান ট্রেনের টিটি। সাজেদুরের প্রদর্শন করা টিকিটে ২২ জনের আসন নম্বর এবং সরকারি বাহিনীর টিকিট, বিক্রয় নিষেধ লেখা দেখতে পেয়ে টিটি তার পরিচয় জানতে চান। এসময় সাজেদুর নিজেকে নৌ-বাহিনীর সদস্য পরিচয় দিলেও এক টিকিটে ২২ জনের আসনের বিষয়টি বলতে গিয়ে ঘাবড়ে যান। টিটির সন্দেহ হলে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঠাকুরগাঁও জিআরপি থানায়। পরে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাজেদুর টিকিট কালোবাজারীর সাথে যুক্ত থাকার কথা স্বীকার করেন। এসময় জিআরপি পুলিশ তল্লাশি করে তার কাছে ২১ থেকে ২৫ মার্চের বিভিন্ন ট্রেনের ১০৫টি আসনের টিকিট জব্দ করে। এর মধ্যে রয়েছে ২১ ও ২২ মার্চের দুটি টিকিট হার্ড কপি এবং ২৫ মার্চের ২৫টি টিকিটের অনলাইন কপি। আর এসব টিকিটের যাত্রাস্থান ঢাকা থেকে পার্বতীপুর ও পঞ্চগড়।
এ বিষয়ে পার্বতীপুর রেলওয়ে নিরাপত্তা পরিদর্শক হাসান শিহাবুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে ঠাকুরগাঁও থেকে একজন টিকিট কালোবাজারীকে আটকের খবর পাই। একইসাথে জানতে পারি আটক ব্যক্তি নেভিতে কর্মরত। বিষয়টি নিশ্চিত হতে নেভির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হই। পরবর্তীতে তাকে রেলওয়ে পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তার কাছ থেকে বিভিন্ন তারিখের ১০৫টি আসনের তিনটি টিকিট এবং ফোনে ২৫টি টিকিটের অনলাইন কপি উদ্ধার করা হয়েছে। তিনটি ফোন এবং ১৪টি সিমকার্ড পাওয়া গেছে। স্মার্ট ফোনে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানের ও ট্রেনের টিকিট বিক্রয় সংক্রান্ত একাধিক ব্যক্তির সাথে কথোপকথোন রয়েছে। প্রাথমিকভাবে তিনি তার অপরাধ স্বীকার করেছেন। রেলওয়ে পুলিশ ও নেভির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জেএন/এমআর