চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর-দুই নম্বর গেট এলাকার ব্যস্ততম সড়কের মাঝপথে রিকশা থামিয়ে যাত্রীর কাছ থেকে ছিনতাই করার দৃশ্য মুঠোফোনে ধারণ করেছিলেন এক সংবাদকর্মী।
শনিবার (২২ মার্চ) দিন দুপুরে অভিনব কায়দায় ছিনতাইয়ের সময় ধারণকৃত ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করতেই ভাইরাল হয়ে যায়।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওর সূত্র ধরে দুই ছিনতাইকারীকে চিহ্নিত করে পুলিশ। একজন নগরের হামজারবাগ এলাকার মৃত হাজী শাহ আলমের ছেলে মো. শাকিল আহম্মদ প্রকাশ সাজু (৪৮)। অপরজন সাতকানিয়া পৌরসভার ছমদর পাড়া এলাকার আমির হামজার ছেলে মো. আলমগীর (৪৫)।
তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় রবিবার (২৩ মার্চ) ভোর ৪টার দিকে ছিনতাইকারী সাজুর অবস্থান নিশ্চিত হয়ে নগরীর পাঁচলাইশ থানার হামজারবাগ এলাকায় অভিযান চালায় থানা পুলিশের বিশেষ টিম। অভিযানে গ্রেপ্তার হয় সাজু।
পুলিশ জানায়, ভাইরাল ভিডিওতে চিহ্নিত অপর ছিনতাইকারী আলমগীরকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তার সাজুর বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদক আইনসহ নানা অপরাধে নগরের বিভিন্ন থানায় ১০টি মামলা এবং পলাতক আলমগীরের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনসহ ৯টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ভাইরাল হওয়া সেই ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, ষোলশহর-দুই নম্বর গেট এলাকায় রাস্তার মাঝখানে একটি রিকশা থামিয়ে দুই যুবক রিকশায় থাকা মধ্যবয়সী যাত্রীর সাথে কথা বলছেন।
কথা বলতে বলতেই রিকশা যাত্রীর মনে ভয় কাজ করছিলো এবং পকেট থেকে টাকা বের করছিলেন। প্রকাশ্যে ছিনতাইয়ের এই ঘটনার ভিডিওচিত্র ধারণ করা হচ্ছে বুঝতে পেরে দুই যুবক দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে এ ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী ব্যক্তি।
ছিনতাইয়ের ওই ঘটনাটি ভিডিও ধারণ করেছিলেন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক পত্রিকা দৈনিক পূর্বকোণের সিনিয়র ফটোসাংবাদিক ও বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক মিয়া আলতাফ।
তিনি জানান, শনিবার দুপুর দেড়টার সময় নগরীর ষোলশহরের ব্যস্ততম সড়ক থেকে ভিডিওটি ধারণ করা হয়। দুর থেকে ভিডিওটি ধারণ করায় ছিনতাইকরীরা প্রথমে বুঝতে পারেনি।
তবে কিছুক্ষণ পরেই আমাকে ডাক দিয়ে ভিডিও বন্ধ করতে বলেন এবং একজন জানান,রিকশাযাত্রী তাদের এলাকার পরিচিত মুরব্বী। প্রশ্ন করেন, ছবি তুলছি কেন?’।
পরে রিকশায় থাকা যাত্রীকে পরিচিত কিনা জিজ্ঞাসা করতেই ছিনতাইকারীরা আমাকে ঝারি দেয়। এক পর্যায়ে সাহস করে তাদের সাথে কথা বলতে গেলেই তারা দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। এরপরে ছিনতাইকারী বলে অনেক চিৎকার করলেও কেউ এগিয়ে না আসায় তাদের ধরতে পারিনি।
অল্প কিছুক্ষণ পর ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আপলোড করা হলে মুহুর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। ভাইরাল হওয়া ভিডিওর সূত্র ধরে প্রকাশ্যে ছিনতাইয়ের ঘটনায় মূল হোতা মো. শাকিল আহম্মদ প্রকাশ সাজুকে (৪৮) গ্রেপ্তার রিতে সক্ষম হয় পুলিশ।
এ বিষয়ে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সোলাইমান জানান, গতকাল দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিও দেখে ছিনতাইয়ের ঘটনার সাথে জড়িত একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ছিনতাইকারী অপর সদস্যকেও চিহ্নিত করা হয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে টিম পাঁচলাইশ। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ব্যক্তিটি বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন জানিয়ে ওই মামলায় সাজুকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে জানান ওসি।
জেএন/পিআর