হত্যার পর প্রেমিকার মরদেহ বস্তাবন্দি করে ফেলে যায় প্রেমিক

চট্টগ্রামে ‘সূত্রহীন’ মামলার রহস্য উদ্ঘাটন করল পিবিআই

অনলাইন ডেস্ক

চট্টগ্রাম নগরীর লালখানবাজার ফ্লাইওভারের নিচ থেকে উদ্ধার হওয়া বস্তাবন্দি অর্ধগলিত মরদেহটির পরিচয় মিলেছে। শুধু পরিচয় নয়, সূত্রহীন এই হত্যাকাণ্ডের রহস্যও উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

- Advertisement -

সংস্থাটির চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের তদন্তে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ধর্মান্তরীত হয়ে বিয়ে করার চাপ সৃষ্টি করায় প্রেমিকাকে গলাটিপে হত্যা করে মরদেহটি কম্বল পেচিয়ে বস্তাবন্দি করে লালখান বাজার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নিচে ফেলে যায় ঘাতক প্রেমিক।

- Advertisement -google news follower

রবিবার (২৩ মার্চ) বিকেল ৫টার দিকে চান্দঁগাও থানার মোহরা এলাকা থেকে প্রেমিক নয়ন বড়ুয়া (২৯)কে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য উঠে আসে।

সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই কর্মকর্তারা জানায়, গ্রেপ্তার নয়ন বড়ুয়া চট্টগ্রামের রাউজান পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডস্থ পশ্চিম গহিরা এলাকার জয় কুমার বাড়ির মৃত মিলন বড়ুয়ার ছেলে। সে দুই ছেলে সন্তানের জনক। স্ত্রী ও সন্তানরা গ্রামে থাকেন।

- Advertisement -islamibank

নিহত জ্যোৎস্না নোয়াখালী জেলার কবিরহাট নলুয়ার চর ভুঁইয়ার হাট এলাকার বাসিন্দা আবুল কালামের মেয়ে। জ্যোৎস্না ও নয়ন চান্দগাঁও থানার কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় অবস্থিত শিল্পগ্রুপ কেডিএসের মালিকানাধীন একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন।

চাকরির সুবাদে সুপারভাইজার পদে কর্মরত নয়নের সাথে জ্যোৎস্না গভীর প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। মাসখানেক আগে নয়ন-জোৎস্না নগরীর ইপিজেড থানাধীন বন্দরটিলা আয়েশা মায়ের গলির কামাল ম্যানসনের নিচতলায় একটি এককক্ষের বাসা ভাড়া নেয়।

সেখানে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে বসবাস শুরু করেন এবং উভয়ের মধ্যে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্কও হয়।

এদিকে জ্যোৎস্না ও নয়ন দুজনই ছিলেন বিবাহিত। নয়নের সঙ্গে সম্পর্ক হওয়ার পর গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে আগের স্বামীকে তালাক দেন জ্যোৎস্না। এরপর নয়নকে স্বামী হিসেবে পেতে তাকে ধর্মান্তরিত হওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে থাকে।

অন্যদিকে চট্টগ্রামের রাউজান এলাকায় আগে থেকে স্ত্রী-সন্তান থাকায় নয়ন তার প্রেমিকা জোৎস্নাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান। এক পর্যায়ে উভয়ের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়।

কিছুদিন যাবৎ বিয়ে না করলে সবকিছু ফাঁস করে দেওয়া এবং মামলার হুমকি দিতে থাকে প্রেমিকা। সবশেষ শনিবার সকালে বিরোধ এবং বাকবিতণ্ডার জেরে জ্যোৎস্নাকে গলাটিপে হত্যা করে নয়ন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ পরিদর্শক মোস্তাফিজুর জানান, হত্যাকাণ্ডের পর নয়ন তার প্রেমিকা জ্যোৎস্নার মরদেহ কম্বল মুড়িয়ে দড়ি ও ওড়না দিয়ে বেঁধে ফেলে।

পরবর্তীতে মরদেহটি একটি প্লাস্টিকের বস্তায় ঢুকায়। বস্তাবন্দি মরদেহটি প্রথমে রিকশাযোগে কিছুদূর নেয়। এরপর অটোরিকশাযোগে লালখান বাজার এলাকায় মরদেহটি ফেলে চলে যায়।

পরে ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে শনিবার (২২ মার্চ) বিকেলে মরদেহটি উদ্ধার করে খুলশী থানা পুলিশ। খবর পেয়ে পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রো ইউনিটের কর্মকর্তারা ভুক্তভোগীর পরিচয় শনাক্ত করে। এরপর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্ত নয়নকে শনাক্ত এবং গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ঘটনায় রোববার (২৩ মার্চ) খুলশী থানায় ভুক্তভোগী জ্যোৎস্নার বড় বোন তৈয়বা বেগম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেন। সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে ক্লু-লেস এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য জানায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

সেখানে জানানো হয়, বিয়ের জন্য চাপ সৃষ্টি করায় প্রেমিকাকে গলাটিপে হত্যার পর গুম করতেই মরদেহটি কম্বল পেচিয়ে বস্তাবন্দি করে ফ্লাইওভারের নিচে ফেলে যায় প্রেমিক।

জেএন/পিআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM