সকাল থেকেই চট্টগ্রাম মহানগরীর আবাসিক এলাকাগুলোর বিভিন্ন বাসার দ্বারে দ্বারে ঘুরে কাজ খুঁজেন গৃহকর্মীর। সাথে থাকে বিশেষ যাদুকরী এক ব্যাগ। যেখানে রয়েছে তালা ভাঙার নানান সরঞ্জাম।
কাজ পেলে তাৎক্ষনিক গৃহকর্মী হিসেবে যোগ দিয়ে রেঁকি করেন পুরো বাসা। না পেলে আবাসিকের নিরিবিলি তালাবদ্ধ বাসা টার্গেট করে তার আশে পাশে সময় নিয়ে ঘুরেন। সুযোগ পেলেই দেখান তাদের অভিনব দক্ষতা।
সবশেষ রবিবার (২৩ মার্চ) তালা ভাঙার সরঞ্জাম ব্যবহার করে নগরীর বাকলিয়া থানার দেওয়ান বাজার এক নম্বর গলির নিরাপদ হাউজিং-২ এর আল-মদিনা ভবনের এক বাসায় চুরি করে সংঘবদ্ধ চোর চক্রটি।
তবে এবার আর শেষ রক্ষা হয়নি। পুলিশের বুদ্ধিমত্তা ও সিসিটি ফুটেজের কল্যানে ওই বাসা থেকে চোরাইকৃত স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন উদ্ধারসহ চোর চক্রটির দুই নারী সদস্য ধরা পড়ে।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন-রোজিনা বেগম (৪০) ও তাসনুভা বেগম (২২)। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা চুরির অভিনব দক্ষতার বর্ণনা দেন। সোমবার (২৪ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ।
পুলিশ জানায়, রবিবার রাতে এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, দেওয়ান বাজার এক নম্বর গলির নিরাপদ হাউজিং-২ এর আল-মদিনা ভবনে তার বাসা চুরি হয়েছে।
অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, রবিবার দুপুর সোয়া একটার দিকে তার স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার নুপুর এবং খালা বুলু বেগম বাসা তালাবদ্ধ করে টেরিবাজারে কেনাকাটা করতে যান।
বাসায় ফিরে তারা দেখতে পান, বেডরুমের স্টীলের আলমারীর তালা ভাঙা ও রুমের ভিতরে কাপড়-চোপড় ছড়ানো-ছিটানো রয়েছে। এরপর জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে বিষয়টি অবহিত করেন।
অভিযোগ পেয়ে বাকলিয়া থানা পুলিশের একটি টিম দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে ওই বাসার সকল সদস্যদের সাথে কথা বলেন এবং বাসার আশে পাশের কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেন।
ফুটেজ পর্যালোচনা শেষে ওইদিন রাতেই বিশেষ অভিযানে নামে টিম বাকলিয়া। অভিযানে ধরা পড়ে চোর চক্রের ২ নারী সদস্য রোজিনা এবং তাসনুভা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুজনই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। পরে চক্রের সদস্য রোজিনা বেগমের হেফাজত হতে চোরাইকৃত ৫ আনা ওজনের ১ জোড়া স্বর্ণের কানের ঝুমকা, ৪ আনা ১ জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, ২ আনা ওজনের ১টি স্বর্ণের আংটি এবং চক্রের অপর সদস্য তাসনুভা বেগমের হেফাজত থেকে চুরিকৃত ১টি রেডমি নোট-৯ মোবাইল এবং ঘটনায় ব্যবহৃত ১টি কাপড়ের ব্যাগের ভিতর তালা ভাঙ্গার যন্ত্রপাতি উদ্ধার করা হয়।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন বলেন, গ্রেপ্তার দুই নারীই পেশাদার চোর। দুজনের তালা ভাঙার ভাল ট্রেনিং আছে।
এ চক্রে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কিনা জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে এবং গৃহকর্তার দায়ের করা মামলায় তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে জানালেন ওসি।
জেএন/পিআর