চট্টগ্রাম নগরীর চকবাজার থানাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌল্লা সড়কের চন্দনপুরা গুলজার বেগম স্কুল সংলগ্ন এলাকায় মধ্যরাতে একটি প্রাইভেটকারে ব্রাশফায়ার করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন।
এতে চারজন গুলিবিদ্ধ হয়। গুলিবিদ্ধদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক আব্দুল্লাহ ও মানিক নামে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
আহত হৃদয় ও রবিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
শনিবার (২৯ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে অবৈধ বালুর মহালকে কেন্দ্র করে আধিপত্যের দ্বন্দ্বের জেরে দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে,শনিবার মধ্যরাত থেকেই কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতু এলাকায় বালু মহালের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে অবস্থান করছিলো সন্ত্রাসীদের দুটি গ্রুপ।
এর মধ্যে চট্টগ্রামের অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী সারোয়ার বাবলার নেতৃত্বে একটি প্রাইভেটকারে ছিলেন নিহত মানিক, আবদুল্লাহ, ইমন এবং রবিনসহ ৬ জন।
আরেকটি গ্রুপে খোরশেদ হাসানের নেতৃত্বে ছিলেন হাসান, রায়হানসহ আরও কয়েকজন। তাদের কাছে ছিল ভারী অস্ত্রশস্ত্র। মূলত রাউজান-রাঙ্গুনিয়া কেন্দ্রীক ‘ডন’ হিসেবেই পরিচিত তারা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি বাইকে করে ভারী অস্ত্রধারী কয়েকজন যুবক দ্রুতগতির একটি প্রাইভেটকার থামিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়।
পরে প্রাইভেটকার থেকে চারজনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আব্দুল্লাহ ও মানিক নামে দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত দুজন বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এদের মধ্যে একজনের পায়ের রানে এবং অপরজন হাতে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তবে দুজনেই শঙ্কামুক্ত আছেন।
নগর পুলিশের উত্তর জোনের উপ-কমিশনার আমিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘বালুর মহালকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসী সারোয়ার বাবলার সাথে সন্ত্রাসী খোরশেদ, রায়হান এবং হাসানের গ্রুপের দ্বন্দ্ব ছিল।
শনিবার মধ্যরাতে একটি প্রাইভেটকারে বাবলা গ্রুপের ৬ জন ছিলো। চার-পাঁচটি মোটরসাইকেল নিয়ে খোরশেদ গ্রুপ তাদের রাজাখালী ব্রিজ থেকে ধাওয়া করে। তাদের মধ্যে পারস্পরিক গোলাগুলি হয়েছে। তাদের কাছে ভারী অস্ত্র ছিল।
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘একপর্যায়ে চন্দনপুরা এলাকায় পুলিশের টহল গাড়ি দেখে সারোয়ার গ্রুপের একজন সাহায্য চাইতে যায়। এর মধ্যে মোটরসাইকেলে এসে অন্য গ্রুপ প্রাইভেটকার লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। দুজনের মৃত্যু হয় এবং গুলিবিদ্ধ হন আরও দুজন। ইমন নামে একজন পুলিশ হেফাজতে আছে। সারোয়ার বাবলা পলাতক।
জড়িতদের গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের বিশেষ টিম সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
জেএন/এমআর