ঈদের দ্বিতীয় দিনে নারী, শিশু, যুবক, বৃদ্ধ—সব বয়সী বিনোদনপ্রেমী ভিড় করেছেন চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে। কেউ সমুদ্রের নোনাপানিতে পা ভেজাচ্ছেন, কেউ স্পিডবোটে ছুটে বেড়াচ্ছেন ঢেউয়ের তালে। কেউ আবার সূর্যাস্ত দেখার অপেক্ষায় সমুদ্রপাড় ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছেন।
তবে শুধু পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকতে নয়, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, ফয়’স লেক অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, পাঁচলাইশ জাতিসংঘ পার্ক, পতেঙ্গা বাটারফ্লাই পার্ক, পারকি সমুদ্রসৈকত, ওয়াটার পার্ক সি ওয়ার্ল্ডসহ অন্যান্য বিনোদন কেন্দ্রে ছিল দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভিড়।
সরেজমিনে মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) নগরের পতেঙ্গা সৈকতে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই দর্শনার্থীর উপচেপড়া ভিড়। আশপাশের এলাকার পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকেও আসছেন অনেকে। কেউ পরিবার-পরিজন নিয়ে, আবার কেউ বন্ধুবান্ধবসহ এসেছেন সমুদ্রের খোলা হাওয়ায় ঈদের এই দিনটি উপভোগ করতে।
নগরের ফিরোজশাহ থেকে সমুদ্রসৈকতে স্ত্রী-সন্তানসহ এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী রবিউল হোসেন। তিনি বলেন, ‘ঈদের প্রথম দিন আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় বেড়িয়েছি। দ্বিতীয় দিনে তাই পরিবারসহ একটু ঘুরতে এলাম সৈকতে। করপোরেট জবের কারণে পরিবারকে তেমন সময় দেওয়া হয় না। তাই ঈদের এই ছুটিতে পরিবারকে সময় দিচ্ছি।’
সিইপিজেড কলসিদীঘির পাড় এলাকার পোশাকশ্রমিক নীলা আফরোজ বলেন, ‘সবাই ঈদে গ্রামের বাড়িতে গেলেও আমাদের গ্রাম থেকে খালাতো ভাই এসেছে চট্টগ্রাম বেড়াতে। তাকে নিয়ে আমার স্বামীসহ বেড়াতে এসেছি। এত ভিড় হবে ভাবিনি।’
সৈকত এলাকায় দায়িত্বরত ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা জানান, দর্শনার্থীরা যাতে কোনও সমস্যায় না পড়েন সেজন্য টহল দেওয়া হচ্ছে।
সকাল থেকে ভিড় জমে চট্টগ্রামের চিড়িয়াখানায়। যেখানে আছে দুর্লভ সাদা বাঘ, সিংহ, মায়া হরিণ, বানর, হনুমান, জেব্রা ও বিভিন্ন প্রজাতির হরিণসহ অসংখ্য পশুপাখি। এখানে শিশু-কিশোরদের সঙ্গে আসেন বয়স্করাও। চিড়িয়াখানার পশুপাখির পাশাপাশি পাহাড়ের মাঝখানে থাকা সিঁড়ি এবং শিশুদের রাইডগুলো বেশ উপভোগ্য।
অন্যদিকে, নগরের খুলশী এলাকায় অবস্থিত অন্যতম বিনোদনকেন্দ্র ফয়’স লেক এমিউজমেন্ট পার্ক। সেখানেও ঈদের দ্বিতীয় দিনে দর্শনার্থীরা ভিড় করেছেন। চট্টগ্রাম শহরের কেন্দ্রে অবস্থিত ৩৩৬ একর জায়গাজুড়ে অবস্থিত নগরের অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র ফয়’স লেক। যার মধ্যে রয়েছে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার জুড়ে আঁকাবাঁকা লেক। লেকের দুপাশে রয়েছে সারি সারি পাহাড় আর হরেক রকম গাছ-গাছালি।
সার্কাস সুইং, বাম্পার কার, ফ্যামিলি রোলার কোস্টার, ফেরিস হুইল, পাইরেট শিপ, কফিকাপ, রেড ড্রাইল্লাইড, ইয়োলো ড্রাই-স্লাইড, বাগ বইন্স—নানা রাইডে মেতেছেন তারা। তরুণদের পছন্দ ওয়াটার পার্ক সি ওয়ার্ল্ড। এখানে জল উৎসবে মেতে ওঠেন দর্শনার্থীরা। বেসক্যাম্পে আর্চারি, ক্লাইম্বিং ওয়াল, ট্রি টপ একটিভিটিতে মাতছেন সবাই।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে আগ্রাবাদের কর্ণফুলী শিশুপার্ক ও চান্দগাঁওয়ের স্বাধীনতা কমপ্লেক্স পার্ক বন্ধ থাকায় সেখানে গিয়ে ফিরে আসছেন দর্শনার্থীরা।
জেএন/এমআর