চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে গভীর রাতে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যায় অভিযুক্ত স্বামী ফরিদুল আলম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টার সময় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
এর আগে মঙ্গলবার বিকেলে বাঁশখালীর খানখানাবাদ এলাকায় গণপিটুনি দিয়ে ফরিদুলকে পুলিশে সোপর্দ করেছিল উত্তেজিত জনতা।
পুলিশ জানায়, ঘুমন্ত স্ত্রী মিনু আক্তারকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর পালিয়ে ছিলেন ফরিদুল। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ফরিদুল আলম উপজেলার খানখানাবাদ ইউনিয়নের ডোংরা গ্রামের কালু ফকির বাড়িতে আসলে স্থানীয় জনতা তাকে আটক করার জন্য জড়ো হতে থাকে।
পালানোর পথ না পেয়ে এক পর্যায়ে সে বিষপান করে ফরিদুল। পরে তাকে আটক করে মারধর করে উত্তেজিত জনতা।
খবর পেয়ে বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক মজনু মিয়ার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদুলকে হেফাজতে নেয়।
পরে উত্তেজিত জনতা পুলিশের কাছ থেকে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে আবার গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলতে বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও করে। পরে বাঁশখালী থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ফরিদুলকে কড়া নিরাপত্তায় উপজেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ফরিদুল পুলিশকে নিজ মুখে বিষ খাওয়ার বিষয়টি জানালে সাথে সাথে সদর হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এর আগে শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ভোরে শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় স্ত্রী মিনু আক্তারকে (৪২) ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন ফরিদুল আলম।
জানা গেছে, খানখানাবাদ ইউনিয়নের ডোংরা কালু ফকিরবাড়ির মৃত দুদু মিয়ার ছেলে ফরিদুল আলমের সঙ্গে বাহারছড়া ইউনিয়নের পশ্চিম ইলশার অজি আহমদের মেয়ে মিনু আক্তারের ১৫ বছর আগে বিয়ে হয়। তাদের সংসারে দুই মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে।
জাদু টোনা করার অভিযোগে ফরিদুল আলম প্রায় সময় নানা অপবাদ দিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করতেন। পরে গত শুক্রবার ভোরে ফরিদুল আলম ঘুমন্ত স্ত্রীকে হত্যা করে পালিয়ে যান।
বাঁশখালী থানার ওসি (তদন্ত) সুধাংশু শেখর হালদার জানান, আসামি ফরিদুল আলম বুধবার সকালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
মঙ্গলবার তাকে স্থানীয় লোকজন গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছিল। আমরা তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে বাঁশখালী হাসপাতাল এবং অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
জেএন/পিআর