চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডাক্তার শাহাদাত হোসেন বলেছেন,সাম্পান চট্টগ্রামের অলংকার। সাম্পান নিয়ে এই ব্যতিক্রমী খেলা অন্য কোথাও নাই। সাম্পান খেলার মাধ্যমে নদী রক্ষার যে আয়োজন সেটাকে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিতে হবে।
সাম্পান ও মাঝিদের রক্ষায় সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা করার আশ্বাস প্রদান কর এবং দূষণরোধের বার্তা দিয়ে মেয়র বলেন, যারা নদী দখল দূষণ করছেন তাদের জেনে রাখা উচিত, এই নদী দিয়ে দেশ চলে। তাই এই কর্ণফুলী নদীকে রক্ষার কোন বিকল্প নাই।
রবিবার (১১ মে) সকালে ঐতিহ্যবাহী সাম্পান খেলা ও চাঁটগাইয়া সংস্কৃতি মেলার ১৯তম আসরের সবচেয়ে প্রধান আকর্ষণ সাম্পান বাইচ প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এসব কথা বলেন।
দখল ও দূষণে বিপর্যস্ত কর্ণফুলী নদী রক্ষার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও সাম্পান বাইচ প্রতিযোগিতা আয়োজন করে আয়োজকরা। এবারের স্পন্সর প্রতিষ্ঠান ছিলেন আব্বাস কনসট্রাকশন।
দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আলী আব্বাসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সাম্পান বাইচ প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ইদ্রিস মিয়া।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সেক্রেটারি মাহমুদুল হাসান চৌধুরী, জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য জুবায়ের উল আলম মানিক। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাম্পান খেলা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক চুয়েটের প্রাক্তন ভিসি প্রফেসর মোজাম্মেল হক।
এদিন সকাল ৬টা থেকে কর্ণফুলী নদীর অভয়মিত্র ঘাট থেকে চরপাথরঘাটা ব্রিজঘাটে সাম্পান বাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। কর্ণফুলী এবং আশেপাশের উপজেলার ১১টি দল এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেন।
এরমধ্যে ১০ দলকে পেছনে ফেলে ১৯ তম আসরের শীর্ষস্থান দখল করে নিয়েছেন ইছানগর সদরঘাট সাম্পান সমিতির মোহাম্মদ ইউসুফ মাঝির দল। দ্বিতীয় হন বোয়ালখালীর মো. রনি এবং তৃতীয় হন চরপাথরঘাটার তারেক মিস্ত্রি।
এছাড়া মো. আমজাত ও সুমন একাদশের মাঝি দিদার আলম, চর পাথরঘাটা ব্রিজঘাট সাম্পান চালক কল্যাণ সমিতি মো. হামিদুল মাঝি, তোতার বাপের হাট মো. রুবেল মাঝি চরপাথরঘাটা, দল ব্লকপাড়া শিকলবাহার মাওলানা ইসমত উল্ল্যাহ শাহ, সদরঘাট সাম্পান মালিক কল্যাণ সমিতির আলী শাহ, শিকলবাহা ব্লক পাড়ার নুর মোহাম্মদ মতি এবং মো. মুন্না মাদ্রাসা পাড়া ১ নম্বর গেটের মোহাম্মদ মহসিন মাঝি এবারের প্রতিযোগীতায় অংশ নেন।
সাম্পান বাইচ দেখতে দু’পাড়ে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। সরাসরি সামনে থেকে সাম্পান বাইচ উপভোগ করতে মাঝ নদীতে সাম্পান ভাড়া করে শত শত মানুষ।
ঐতিহ্যবাহী সাম্পান খেলা উপলক্ষে চরপাথরঘাটার পুরাতন ব্রিজঘাট সিডিএ মাঠে চলে চার দিনের চাঁটগাইয়া আঞ্চলিক সংস্কৃতিক মেলা।
খেলা ও মেলার বিষয়ে সাম্পান খেলা ও চাটগাইয়া সংস্কৃতি মেলা ১৪৩২ এর সদস্য সচিব এবং চট্টগ্রাম ইতিহাস সংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান অলিউর রহমান বলেন, সাম্পান খেলা এখন বাংলাদেশের একটা বৃহত্তম সামাজিক আন্দোলন। এই সামাজিক আন্দোলন নদ নদী রক্ষায় সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে হবে।
জেএন/পিআর