হৃদরোগের জন্য চট্টগ্রামে বিশেষায়িত কোনো হাসপাতাল না থাকায় ২০২২ সালে উন্নতমানের একটি হৃদরোগ হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন তৎকালীন সরকার।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ২৬ মে থেকে নগরীর গোলপাহাড়স্থ মেরী স্টোপস ক্লিনিকের পাশে একটি ভাড়া বাসায় হাসপাতালটির সেবা কার্যক্রম শুরু হয়।
তবে রোগীর চাপ ও সেবা প্রদানে নানা সমস্যায় সম্মুখিন হয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক মানের বিশেষায়িত হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের দাবি জানিয়ে আসছে নগরবাসী।
অবশেষে স্বপ্ন পুরণ হতে যাচ্ছে চট্টগ্রামবাসীর। স্থায়ী ঠিকানা পেতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল।
নগরীর দক্ষিণ কাট্টলীর সাগরিকা এলাকায় ২৩ শতক জায়গা ৩০ বছরের জন্য প্রতীকী মূল্যে চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনকে ইজারা দিয়েছে সরকার।
চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে আগামী ১৪ মে (বুধবার) আনুষ্ঠানিকভাবে জমির দখল বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এতে প্রধান অতিথি থেকে জমির কাগজপত্র ও দখলপত্র হস্তান্তর করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. প্রবীর কুমার দাশ জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা স্থায়ী জায়গার অপেক্ষায় ছিলাম।
এই বরাদ্দ হাসপাতালের সেবার পরিধি বাড়াতে এবং আধুনিক হৃদরোগ হাসপাতাল নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। জমি বুঝে পাওয়ার পরপরই হাসপাতাল নির্মাণের প্রাথমিক কাজ শুরু হবে।
জানা গেছে, হৃদরোগ চিকিৎসাকে আরও সহজলভ্য ও উন্নত করার লক্ষ্যে শুরু থেকেই অস্থায়ী সেবাকেন্দ্র গোলপাহাড়স্থ মেরী স্টোপস ক্লিনিকের পাশের ভাড়া বাসায় সচেতনতা কার্যক্রম চালিয়ে আসছে এই প্রতিষ্ঠান।
রোগীদের চাপ বেশি হওয়ায় হাসপাতালের সেবার পরিধি বাড়াতে হৃদরোগের পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল নির্মাণের লক্ষ্যে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সলিমপুর এলাকায় ২ দশমিক ৫০ একর জমি অধিগ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল।
সেখানে আধুনিক কার্ডিয়াক হাসপাতাল নির্মাণের পরিকল্পনাও প্রণয়ন করা হয়েছিল। এমনকি ওই জমিতে ভূমি উন্নয়নের প্রাথমিক কাজও শুরু করা হয়েছিল।
কিন্তু প্রশাসনিক জটিলতা ও জমি সংক্রান্ত কিছু আইনি জটিলতার কারণে সেই প্রকল্পটি দীর্ঘদিন থমকে থাকে। জমি সংক্রান্ত মামলা-মোকদ্দমা এবং অন্যান্য জটিলতা নিরসন না হওয়ায় হাসপাতাল নির্মাণ কাজও আর এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এতে করে অপেক্ষার প্রহর বাড়তে থাকে চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনের। তবে গতকাল থেকেই পুনরুজ্জীবিত হয় আশা। নতুন করে নগরীর দক্ষিণ কাট্টলীর সাগরিকা এলাকায় ২৩ শতক জায়গা ৩০ বছরের জন্য প্রতীকী মূল্যে চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনকে ইজারা দিয়েছে সরকার।
এই বরাদ্দের মাধ্যমে সে স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে বলে মনে করছেন চট্টগ্রাম হার্ট ফাউন্ডেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ডা. প্রবীর কুমার দাশ। বলেন, সেখানেই দ্রুত সময়ের মধ্যে আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নতুন হাসপাতালে আধুনিক ক্যাথল্যাব, ওপেন হার্ট সার্জারি ইউনিট, ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ), সিসিইউ, কার্ডিওলজি এবং কার্ডিয়াক সার্জারি বিভাগ স্থাপন করা হবে।
দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত হৃদরোগীদের জন্য বিশেষ সেবার ব্যবস্থাও রাখা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জেএন/পিআর