চ‌সিক কর্মকর্তাদের পদোন্নতিতে অনিয়ম, দুদকের অভিযান

অনলাইন ডেস্ক

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) পদে এক কর্মকর্তা ফেল করার পরও পদোন্নতি ও গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশের পর বাতিল। এ ঘটনায় বিস্ময়, বিতর্ক ও চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে প্রতিষ্ঠানটির ভেতরে এবং বাইরে।

- Advertisement -

পদোন্নতি প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পৌছায় দুদকেও। সবশেষ মঙ্গলবার (২০ মে) চসিক কার্যালয়ে অভিযান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি টিম।

- Advertisement -google news follower

দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক সাঈদ মুহাম্মদ ইমরানের নেতৃত্বে এ অভিযান শুরু করা হয়েছে। জানা গেছে, আজ সকালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট শাখায় দুদকের এনফোর্সমেন্ট ইউনিট থেকে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

দুদক জানায়, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সচিবের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে এবং অভিযোগ সংশ্লিষ্ট রেকর্ডপত্রাদি সংগ্রহ করা হয়েছে। সংগৃহীত রেকর্ডপত্রাদি পর্যালোচনা করে এনফোর্সমেন্ট টিম অতি দ্রুত কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।

- Advertisement -islamibank

জানা গেছে, মৌখিক পরীক্ষায় ফেল করার পরও চসিক উপ-সহকারী প্রকৌশলী রুপক চন্দ্র দাশকে সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।

২১ এপ্রিল দেওয়া অফিস আদেশ অনুযায়ী, রূপকসহ আরও তিনজনকে এ পদোন্নতি দেওয়া হয়। কিন্তু রূপকের ক্ষেত্রে বিষয়টি ব্যতিক্রম-কারণ তিনি ৬ মার্চ অনুষ্ঠিত মৌখিক পরীক্ষায় আনুষ্ঠানিকভাবে ফেল করেছিলেন।

সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ওইদিন মোট আটজন উপ-সহকারী প্রকৌশলীর মৌখিক পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন মাত্র তিনজন–মু. সরওয়ার আলম খান, জাহাঙ্গীর হোসেন ও ফখরুল ইসলাম। একজন অনুপস্থিত ছিলেন এবং বাকি চারজন ফেল করেন, যাদের একজন রুপক চন্দ্র দাশ।

মৌখিক পরীক্ষায় ২০ নম্বরের মধ্যে পাস নম্বর নির্ধারিত ছিল ১০। রুপক পেয়েছেন ৯, যার মধ্যে রয়েছে কারিগরি সদস্যদের দেওয়া ৪ ও অন্যান্য সদস্যদের দেওয়া ৫।

অথচ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের কর্মচারী চাকরি বিধিমালা ২০১৯ অনুযায়ী, সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) পদে পদোন্নতির জন্য প্রার্থীর ন্যূনতম ৮ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া বাধ্যতামূলক।

এ নিয়ম উপেক্ষা করে রূপককে পদোন্নতি দেওয়াকে অনেকেই ‘বিধিভঙ্গ’ ও ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ হিসেবে দেখছেন।

সবচেয়ে বেশি বিতর্ক তৈরি হয়েছে মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের সই নিয়ে। কারণ একদিকে তার স্বাক্ষরে পরীক্ষার ফলাফলে বলা হয়েছে, রুপক ফেল করেছেন।

অন্যদিকে পদোন্নতির আদেশেও তার স্বাক্ষর রয়েছে, যেখানে রূপকের নামটিই আছে প্রথমে। এমন দ্বৈত অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও মেয়রের সিদ্ধান্ত গ্রহণের পদ্ধতি নিয়ে।

তীব্র সমালোচনার ডা. শাহাদাত হোসেনের আরেক স্বাক্ষরে উপ-সহকারী প্রকৌশলী রুপক চন্দ্র দাশের পদোন্নতি বাতিল করেন।

তবে দুদকের অভিযান সম্পর্কে চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, শুধু রুপকের বিষয়‌টি নয়, বিগত স্বৈরাচার সরকার আমলের বি‌ভিন্ন দুর্নী‌তি বিষয়ে তদন্ত করতে এসেছে দুদকের কর্মকর্তারা। এসব বিষয়ে আমার কাছে জানতে চেয়েছেন।

রু‌পকের প্রমোশন হয়েছে ২০২‌১ সালে। নিয়োগ অনুযায়ী মূলত তার পদোন্নতি হওয়ার কথা ২০১৩ সালে। আমার আমলে কোন অ‌নিয়‌ম নিয়ে দুদক আসে‌নি। সব আগের আমলের অভিযোগের তদন্তে এসেছে তারা।

দুদক জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-১ এর সহকারী পরিচালক সাঈদ মুহাম্মদ ইমরান বলেন, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিদ্যুৎ উপ-বিভাগের কর্মকর্তাদের পদোন্নতি প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পেয়ে ‘আমরা অভিযান শুরু করেছি। অভিযুক্তরা এখনো অনুপস্থিত। তারা এলে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে দেখব।’

জেএন/পিআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ