বরাবরের মতোই অনেকেরই ধারণা শহরের বাতাসে ঈদের আমেজ কম। মফস্বল শহর অথবা গ্রামে ঈদের আমেজ অন্যরকম। তাই ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফেরাটাই যেন উৎসব।
আর এ উৎসবের সামিল হতে এবং প্রিয়জনদের টানেই আনুষ্ঠানিক ছুটির প্রথম দিন আজ বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকাল থেকে শহর ছাড়ছেন নগরবাসী।
ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে সড়কের পাশাপাশি রেলপথে শেকড়ের টানে ফিরছেন তারা। কিন্তু যাত্রাপথ যেটাই হোক, গন্তব্য পৌঁছাতে ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় যানজট-জনজট। তবে এবার সে অভিযোগ অনেকটাই কম।
চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন বাস টার্মিনালে যাত্রীর চাপ বেড়েছে। নতুন-পুরাতন দুই রেলস্টেশনের প্ল্যাটফরমেও অসংখ্য যাত্রী অপেক্ষমান। বৃহস্পতিবার সকালে বিভিন্ন টার্মিনাল ও রেলস্টেশনে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে।
সকাল থেকেই সড়কে শহর ছাড়ার হিড়িক দেখা যায়। টার্মিনালগুলোর আশেপাশের সড়কগুলোতে ঘরমুখো মানুষের উপচে পড়া ভিড়ও লক্ষ্য করা গেছে।
বাস : অলংকার, নতুনব্রিজ, বহদ্দারহাট, কদমতলী ও অক্সিজেন-মুরাদপুরের বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাওয়া দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বাসগুলোতেও যাত্রীর চাপ ছিল। বেশি মানুষ বাসে করেই শহর ছাড়ছেন।
অলংকার বাস কাউন্টার উত্তরবঙ্গগামী একটি বাসের কাউন্টার ম্যানেজার রাইসুল ইসলাম জানান, গতকাল বুধবার বিকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বাসগুলোর সবচেয়ে বেশি চাহিদা ছিল। বৃহস্পতিবার সকালেও প্রচুর টিকিট বিক্রি হচ্ছে। লাইনে দাঁড়িয়ে সবাই টিকিট নিচ্ছেন।
ট্রেন : গতকাল বুধবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে ঘরমুখো মানুষের ভিড় দেখা যায়। বিশেষ করে বৃহস্পতিবার ভোর থেকেই স্টেশন জুড়ে যাত্রীদের সরব উপস্থিতি ঈদ যাত্রার সেই চিরচেনা দৃশ্যকে ফিরিয়ে আনে।
টিকিট অনলাইনে বিক্রির কারণে স্টেশনের কাউন্টারগুলো অনেকটাই ফাঁকা দেখা গেছে। এতে ভোগান্তিও কমেছে বলে জানিয়েছে যাত্রীরা।
স্টেশনের প্ল্যাটফরমে অপেক্ষমাণ যাত্রী চাকরিজীবী আমিনুল শাহিন তিনি স্ত্রী-সন্তানসহ যাচ্ছেন লাকসাম গ্রামের বাড়ি। তার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার থেকে ১০ দিনের লম্বা ছুটি শুরু। আমার কাছে ঈদ মানেই বাড়ি ফেরা, পরিবার-পরিজনের টানে ফেরা।
তিনি আরও বলেন, সারা বছর পরিবার থেকে আলাদা থাকার পর ঈদেই তো কাছের মানুষদের কাছে যাওয়া হয়, আনন্দে কাটানো হয় কয়েকটা দিন। এই ফেরা যেন শুধু বাড়ি ফেরা নয়, নিজেকেই ফিরে পাওয়া।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার বলেন, সব ট্রেন সময়মতো ছেড়ে গেছে. স্টেশনে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ভ্রাম্যমান আদালতের পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন।
টিকিট ছাড়া কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। কালোবাজারির সঙ্গে জড়িতদের ধরতে পারলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট নিরসনে মহাসড়কজুড়ে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে। যানবাহনের চাপ বাড়লেও কোথাও যানজট সৃষ্টি হয়নি বলে জানিয়েছে হাইওয়ে পুলিশ।
জেএন/পিআর