রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে সাবেক সংবাদ উপস্থাপিকা সাফিনা আহমেদ তরীর মরদেহ উদ্ধারের পর নানা রহস্য তৈরি হয়েছে। যা নিয়ে ইতোমধ্যেই পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।
উপস্থাপিকার মৃত্যু ঘিরে সাংবাদিক মহলে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
সংবাদ উপস্থাপিকা সাফিনা আহমেদ তরী এক সময় জনপ্রিয় বেসরকারি টিভি চ্যানেল ২৪ এবং আরটিভিতে কাজ করেছেন।
পরবর্তীতে তিনি ব্র্যাক ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। তার মরদেহ ৮ জুন ২০২৫ তারিখে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে পাওয়া যায়, যা চিকিৎসকরা তাৎক্ষণিকভাবে হাতিরঝিল থানায় জানান।
ওই ঘটনার পর পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে। তবে এখনও মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যায়নি।
হাতিরঝিল থানার ওসি মোহাম্মদ রাজু জানিয়েছেন, তদন্ত চলছে এবং একাধিক টিম বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে।
তার ব্যক্তিগত জীবন, কর্মস্থলের পরিবেশ, এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কার্যকলাপ নিয়েও তদন্ত চালানো হচ্ছে।
সাফিনার পরিবার দাবি করছে, তিনি আত্মহত্যা করতে পারেন না। পরিবারের সদস্যরা তার স্বাভাবিক মৃত্যুর সম্ভাবনাকে খারিজ করে দিয়েছেন এবং বলছেন, এতে নিশ্চয়ই কোনো ষড়যন্ত্র লুকিয়ে রয়েছে। তারা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছেন।
প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, তার শরীরে দৃশ্যমান কোনো আঘাতের চিহ্ন ছিল না। তবে মৃত্যুর সময় এবং পরিস্থিতির সঙ্গে কিছু অসঙ্গতি রয়েছে যা পুলিশের তদন্তকে আরও গভীর করেছে।
পুলিশ ইতোমধ্যে আশপাশের বাসিন্দা, সহকর্মী এবং পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলছে।
সাংবাদিক মহলে তরীর মৃত্যুতে ব্যাপক শোক এবং ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তার সহকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং দ্রুত সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
এই ঘটনা সামাজিক নিরাপত্তা এবং নারীদের নিরাপত্তা সম্পর্কেও প্রশ্ন তুলেছে। বাংলাদেশের মিডিয়া অঙ্গনে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সম্ভাব্য সহিংসতা প্রতিরোধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠেছে।
ঢামেক ফরেনসিক বিভাগ জানিয়েছে, ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলেও বিস্তারিত রিপোর্ট পেতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে। রিপোর্ট পাওয়ার পরই জানা যাবে—এটি স্বাভাবিক মৃত্যু, আত্মহত্যা না কি হত্যাকাণ্ড।
জেএন/পিআর