সপ্তাহব্যাপী টানা ভারি বর্ষণ এবং পাহাড়ি ঢলের পানিতে কক্সবাজারের নিম্নাঞ্চল ব্যাপকভাবে প্লাবিত হয়েছে। জেলার ৮০টিরও বেশি গ্রামের হাজারো মানুষ পানিবন্দি হয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। প্রধান নদীগুলোর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি চলে আসায় নতুন করে বন্যার আশঙ্কায় দিন কাটছে উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দাদের।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ইমরান হোসন সজিব জানিয়েছেন, টানা বৃষ্টিতে পুরো জেলার আনুমানিক ৮০টি গ্রামের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চকরিয়া ও পেকুয়া উপজেলা। মাতামুহুরী নদীর পানি উপচে পড়ায় এই দুই উপজেলার দুই হাজারের বেশি ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে এবং অন্তত দশ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
কক্সবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সালাহউদ্দিন আহমেদ নিশ্চিত করেছেন, বাঁকখালী ও মাতামুহুরী নদীর পানি বিপদসীমার কাছাকাছি উঠে এসেছে। ফলে নদীর পাড়ের অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া উপজেলার কিছু বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং সেগুলোর সংস্কার কাজ দ্রুত চলছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ এ বি হান্নান জানান, জুলাই মাসের প্রথম সাত দিনে জেলায় মোট ৬৯৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। তিনি বলেন, এটি ভারি বৃষ্টিপাত হিসেবে ধরা হয়, কারণ কক্সবাজারে প্রতিদিন গড়ে ৯৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হচ্ছে।
হান্নান আরও উল্লেখ করেন, জুলাই বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাতের মাস। এ মাসে গড়ে ২২ দিন বৃষ্টি হয়। চলমান এই বৃষ্টির প্রবণতা ৯ জুলাই থেকে কিছুটা কমবে। এরপর ২-৩ দিনের বিরতি দিয়ে আবার বাড়বে।
গত বছর কক্সবাজারে জুলাই মাসে ১ হাজার ৭০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছিল জানিয়ে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, চলতি মাসে সেই রেকর্ড ভেঙে যেতে পারে।
অবিরাম বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট এই পরিস্থিতিতে জেলার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হচ্ছে এবং পানিবন্দি মানুষের জন্য জরুরি ত্রাণ সহায়তার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছে বলে জানা গেছে।
জেএন/এমআর