টাঙ্গাইলে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে টনসিল অপারেশনে অস্ত্রোপচারের পর তাসরিফা আক্তার নামে ৯ বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল শুক্রবার (২৫ জুলাই) দুপুর সাড়ে ৩ টার দিকে মির্জাপুর পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকার সমবায় মার্কেটের দোতলায় অবস্থিত মির্জাপুর মডার্ন হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে।
অভিযোগ উঠেছে, দায় এড়াতে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ শিশুটিকে কুমুদিনী হাসপাতালে রেফার্ড করে। তবে এই ঘটনার পরপরই হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সসহ কর্তৃপক্ষ পালিয়েছে।
নিহত শিশু তাসরিফা আক্তার টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার লাউহাটি ইউনিয়নের পাচুটিয়া গ্রামের পারভেজ আহমেদ ও পলি বেগম দম্পতির বড় মেয়ে। সে স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনা করতো।
নিহতের বাবা পারভেজ মিয়া অভিযোগ করে বলেন,‘অপারেশনের ভুলেই আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে।
বলেন, তিনি ঢাকার রপ্তানি এলাকার একটি কারখানায় মেকানিক পদে চাকরি করে। দুপুরে মেয়েকে টনসিল অপারেশনের জন্য ক্লিনিকে ভর্তি করেন। দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে অপারেশন শেষ হলে মেয়েকে বেডে দেওয়া হয়।
এরপর খিচুনি উঠলে নার্সদের ডেকে দেখালে তারা বিষয়টি স্বাভাবিক বলে জানান এবং বলেন, কিছুক্ষণের মধ্যে ঠিক হয়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু পরে আমার মেয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়লে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ কুমুদিনী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়।
সেখানে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে মেয়েকে নিয়ে ক্লিনিকে ফিরে এলে কেউ কথা না বলে পালিয়ে যায়।’
অভিযোগের বিষয়ে চিকিৎসক ডা. মো. মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। এনেস্থিসিয়া ভুলের কারণে রোগীর মৃত্যু হতে পারে।’
তবে অ্যানেস্থেসিয়া ডা. সাইফ আব্দুল্লাহ বলেন, ‘অ্যানেস্থেসিয়ায় ভুল হলে রোগীর জ্ঞান ফিরবে না। কিন্তু অপারেশনের পর রোগীর জ্ঞান ফিরেছে এবং কথাও বলেছে।’
এ বিষয়ে ক্লিনিকের মালিক হালিম মিয়া ও মোস্তফা মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তারা একেক সময় একেক রকম তথ্য দেন। অভিযোগ রয়েছে, তারা ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে নিহত শিশুর পরিবারকে অর্থ দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফরিদুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ওসি মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম বলেন, শিশু মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর পুলিশ পাঠানো হয়েছিল।
ঘটনাস্থলে ভিকটিমের পরিবার এবং লাশ কোনোটাই পাওয়া যায়নি। দ্রুত ভিকটিম লাশ নিয়ে দেলদুয়ারে তাদের নিজস্ব বাড়িতে চলে গেছেন।
তিনি বলেন, আমি ভিকটিমের পরিবারকে সংবাদ পাঠিয়েছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেএন/পিআর