রোবট প্রযুক্তিতে বিশ্বসেরার আসনে রয়েছে চীন। এবার বিশ্বকে তাক লাগানোর মতোই উদ্ভাবন করেছে দেশটি। মানুষ নয়, রোবটই সামলাচ্ছে রাস্তার যানজট।
ট্রাফিকের গতিপথ নির্ধারণ করছে মাল্টি-মডেল এআই প্রযুক্তির হিউম্যানয়েড রোবট। রাস্তায় নেমে চেক করছে গাড়ির লাইসেন্স,কথা বলছে চালকের সাথে।
আবার সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দেশটির সোয়াত পুলিশ টিমের সাথেই টহল দিতে দেখা গেছে প্রযুক্তির রোবটকেই। মানুষের বিকল্প নয়, বরং তার সহায়ক হয়ে উঠছে এই যান্ত্রিক পুলিশ।
সম্প্রতি চীনের প্রচলিত ট্রাফিক পুলিশের আচরণ অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রোবট। তার কাজ হলো শহরের ব্যস্ত রাস্তাগুলোতে গাড়ি ও পথচারীদের শৃঙ্খলায় রাখা।
এমন একটি ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়ে গেছে। ভাইরাল সে ভিডিওতে দেখা যায়, দেশটির সাংহাই শহরের রাস্তার মোড়ে মোড়ে যানজট সামাল দিতে ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকা পালন করছে এ রোবট।
কন্ঠস্বরের মাধ্যমে এবং হাতের ইঁশারা দিয়ে পথচারীদের হাঁটাচলা ও গাড়ি চলাচলের নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছে রোবট।
তবে শিয়াও হু নামে এ রোবট এখনো পুরোপুরি সিডিউল অনুযায়ী দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত নন। এটি এখনো পরীক্ষামূলক পর্যায়ে আছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে সিচুয়ান প্রদেশের মিয়ানইয়াং শহরেও যানজট সামলানোর পাশাপাশি নাশকতাকারীদের মোকাবিলায় পুলিশের দায়িত্ব দক্ষতার সঙ্গে পালন করছে রোবট।
প্রযুক্তিকে পুলিশি কাজে ব্যবহার করে মিয়ানইয়াংকে গড়ে তোলা হচ্ছে নিরাপদ শহর হিসেবে। গুরুত্বপূর্ণ সড়কে মানুষ নয়, টহল দেয়া শুরু করেছে রোবটই। এ ঘটনা কোনো বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর নয়।
অপর একটি ভাইরাল ভিডিওতে দেখা যায়, যানজট সামলানোর পাশাপাশি নাশকতাকারীদের মোকাবিলার কাজও দক্ষতার সঙ্গে পালন করছে রোবটই।
জানা গেছে, মিয়ানইয়াং শহরের ব্যস্ত সড়কগুলোতে এখন প্রায় প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত রোবট-পুলিশের পদচারণা দেখতে পান শহরবাসীরা।
গরমের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশের বদলে রোবটই ব্যস্ততম মোড়ে দায়িত্ব পালন করছে। আবার কোথাও কোথাও দেখা যাচ্ছে গাড়ির লাইসেন্স স্ক্যান করার পাশাপাশি পথচারীদের সঙ্গে কথাও বলছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার রোবট।
অপর এক ভিডিওতে দেশটির সিচুয়ানের স্পেশাল ফোর্স মহড়ায় দেখা যায়—একটি রোবট কুকুর দৌড়ে গিয়ে সন্দেহভাজনের দিকে ছুড়ে দেয় একটি অপরাধী ধরার জাল।
মাথার ওপর ঘূর্ণায়মান ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা, চারপাশে চারটি লেন্স। তাতে সব কিছু ধারণ করে তাৎক্ষণিকভাবে পাঠাচ্ছে পুলিশের কন্ট্রোল রুমে।
অর্থাৎ অপরাধীদের শনাক্তে সদা জাগ্রত যন্ত্রমানব। পর্যবেক্ষণের দিক দিয়ে কোনো কোনো ক্ষেত্রে মানুষের চেয়েও এগিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাররি রোবট।
পুলিশ বলছে, এই রোবট শুধু টহল দেয় না, আচরণ পর্যবেক্ষণ করে, স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচয় যাচাই করতে পারে। বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে আক্রমণ ঠেকাতেও সক্ষম এগুলো।
শহরের ইন্টেলিজেন্স কমান্ড সেন্টারের কর্মকর্তারা বলছেন, রোবট ব্যবহার মানে এখন আর শুধু আধুনিক বিলাসিতা নয়, এটি বাড়াবে পুলিশ ফোর্সের কার্যক্ষমতা, কমিয়ে আনবে নিরাপত্তা ঝুঁকি।
জেএন/পিআর